ওয়াশিংটন ডিসিতে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশি একজন সাংবাদিক ডয়চে ভেলের তথ্যচিত্রের প্রসঙ্গ তুলে ধরে জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্র কি র্যাবের ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে?
জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমি এখান থেকে কোনো ব্যবস্থার পূর্বাভাস দেখতে যাচ্ছি না। তবে ওই নিবন্ধ ও ভিডিওতে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলো আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। আর আমরা আশা করব, বাংলাদেশ সরকারও তা-ই করবে।’ তিনি বলেন, ‘তবে বিশদভাবে বলতে হলে বলব, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
র্যাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এমন সময় ওই মন্তব্য করেছে, যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে বৈঠক করতে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। আগামী সোমবার ওই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে অন্য ইস্যুগুলোর মধ্যে র্যাবের ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করবে বাংলাদেশ।
ডয়চে ভেলে ও নেত্র নিউজের এক ‘যৌথ অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রে’ র্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে ‘হুইসেলব্লোয়ার’ হিসেবে দুজনকে তুলে ধরা হয়েছে এবং দাবি করা হয়েছে, তাঁরা র্যাবের সাবেক কমান্ডার। তাঁরা দাবি করেছেন, শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনে এই অভিজাত বাহিনীকে ব্যবহার করছেন।
তথ্যচিত্রে ওই দুজন হত্যা, নির্যাতন ও গুমের মতো বিষয়ে কথা বলেছেন। সেই দুজনের একজন র্যাবকে ‘ডেথ স্কোয়াড’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর তুলে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই নিষেধাজ্ঞার পর পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মন্তব্য করেছেন। গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরকালে বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার বার্ষিকীতে সাধারণত নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় তা হয়নি।
তবে র্যাব সংস্কারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তাগিদ দিয়ে আসছে। ডয়চে ভেলের তথ্যচিত্রটি র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুরনো অভিযোগ নতুন করে তুলে এনেছে।