পুলিশ থানায় নেবার পর প্রথমে একটা ছোট রুমে আটকে রাখে।আমার সাথে আরো চার জনকে এরেস্ট করা হয়েছে।মানে আমরা থানায় ছিলাম মোট পাঁচজন।এদের মধ্যে একজন নওমুসলিম।কিছুক্ষণ পর আরেকজনকে আনা হলো। এই ছেলেটিকে রাস্তা থেকে সন্দেহজনকভাবে নিয়ে আসা হয়েছে।প্রথমে একজন জিন্সপ্যান্ট পড়া মহিলা ডিবি পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল।আমাকে আমার গ্রাম,থানা,জেলা ইত্যাদি জিজ্ঞেস করছিল।শেষে জিজ্ঞেস করলো আমি ঢাকায় কোথায় থাকি? বললাম,কেরানীগঞ্জের কদমতলীতে থাকি।মহিলা গলা হাকিয়ে চিৎকার দিয়ে বললো,বেয়াদবের বাচ্চা তুই এখানে কি জন্য আসছিস? তারপর সবাইকে ওসির রুমে নিয়ে যাওয়া হলো।সেখানেও বেশ কয়েকজন ডিবি পুলিশ আবার একইভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতে লাগলো।ওসি তুইতুকারি করে খুব দুর্ব্যবহার করতে লাগলো। পরে লকাপে নিয়ে আটকে রাখা হলো।ওসি এবং ডিবি পুলিশের কথাবার্তায় জানতে পারলাম যে জায়গা থেকে এরেস্ট করা হয়েছে জায়গাটা চকবাজার ডিসি অফিসের সামনের অংশ।তার সাথেই ঢাকেশ্বরী মন্দির। আর আমি আছি চকবাজার থানার লকাপে।আমরা ভেতরে আছি মোট ছয়জন।যেই ছেলেটাকে পুলিশ সন্দেহজনকভাবে এরেস্ট করেছে তার পরিবার তাকে দেখতে আসছে। কিছুক্ষণ পর ছেলেটিকে ছেড়ে দেয়া হলো।আমাদের বাকি পাঁচজনকে জিজ্ঞেস করা হলো আমরা এই ছেলেটাকে চিনি কিনা?বললাম,না।বুঝলাম থানায় ভালো আর্থিক লেনদেন হয়েছে।কিন্তু সেটা যেহেতু সচক্ষে দেখিনি তাই সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছি না।এখন বর্তমানে আমরা ভেতরে আছি মোট পাঁচজন। এদের নাম যথাক্রমে মহসিন,হযরত আলী,জুবায়ের,নওমুসলিম আব্দুর রহমান @দয়া দেবনাথ এবং আমি ইকবাল।রাতে পুলিশের ডি আই জি আসলো জিজ্ঞাসাবাদ করতে। ডি আই জি সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, বল তোরা কোন দল করিস?তোরা তো জামাত – শিবির করিস।সবাই মাথা নেড়ে বললো আমরা কোন দল করি না।কিন্তু ডি আই জি সাহেব তা মানতে নারাজ। একজন একজন করে প্রত্যেককেই চড়-থাপ্পড় মেরে বের করতে চাইলেন আমরা কি জামাত – শিবির করি কিনা? তারপর প্রত্যেককে কান ধরিয়ে বললেন, বল! যদি কোনদিন শিবির করি নিজ নিজ মায়ের সাথে করি। কথাটা উচ্চারণ করা খারাপ তাই আমি চুপচাপ দাড়িয়ে থাকি। আমাকে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতে দেখে ডি আই জি সাহেব আঙ্গুল উচিয়ে বলেন,দেখ এই শালা শিবির করে তাই চুপচাপ আছে।
তারপর সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো আমাদের সাথে আর কেউ আছে কিনা। মহসিন নামের ছেলেটি বললো,তার সাথে দুইজন ছিল যারা পল্টনে হোটেলে নাস্তা করে বাড়ি চলে গেছে।তারা কেউ মিছিলে যায়নি।
(চলবে)