
মহসিনের রেফারেন্সে মাইনুলকেও বাসা থেকে ধরে নিয়ে আসলো ডিবি পুলিশ। এখন আমরা মোট কেস পার্টনার হলাম ছয় জন।মজার ব্যাপার হলো এরা কেউই কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত না।তারপরও কেন এদের এরেস্ট করা হলো সেটা বারবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে আমার জন্য মোটামুটি ভালোই হয়েছে বলা যায়। জেলখানার অভিজ্ঞতা নেয়া আমার জন্য খুব প্রয়োজন। সেই অভিজ্ঞতাই এখন লিখছি। এই ছয় জনকে প্রথমে একটা লকাপে আটকে রাখা হলো।প্রথম দিন গিয়ে আমি টানা ঘুম দিলাম যাতে মাথা থেকে সমস্ত টেনশন দূর হয়।জেলে তিনবেলা খাবার দেয়া হয়।সকালে গমের রুটি আর সবজি।দুপুরে ডাল ভাত আর সবজি। আর রাতে ডাল ভাত সবজির সঙ্গে ছোট এক টুকরো মাছ। সপ্তাহে একদিন মাছের পরিবর্তে ছোট ছোট দুই পিস গরুর মাংস আর কোনদিন একদিন এক টুকরো মুরগীর মাংস। ঈদে মিলাদুন্নবী,বিজয় দিবস,২৬শে মার্চ,১লা বৈশাখ আর দুই ঈদে থাকে বিশেষ খাবার। মানে গরুর মাংস,পোলাও,মুরগীর রোস্ট,মিষ্টি,পান – সুপারী ও ছোট একটা কোল্ড ড্রিঙ্কস। এই হচ্ছে জেলের খাবার।যাদের কাছে টাকা আছে তাদের জন্য আছে কারা পিসি ক্যান্টিন থেকে বিভিন্ন খাবার ও তরকারি কিনে খাবার সুযোগ।কারাগারে প্রেরণের পর মিনিমাম দশ দিন বন্দীদের রাখা হয় কোয়ারেন্টাইনে মানে স্পেশাল লকাপে।দশ দিন পার হলে পাঠিয়ে দেয়া হয় জেলখানার ওয়ার্ডে। কোয়ারেন্টাইনে থাকা একটু কষ্টকর।তাই দশ দিন একটু কষ্টেই কেটে গেলো। কারাগারে দুই শ্রেণীর বন্দি দেখা যায়। এক শ্রেণী অপরাধী আর আরেক শ্রেণী নিরপরাধ।অপরাধীদের জন্য জেলখানা বেহেশত সমতুল্য। আর নিরপরাধ ব্যাক্তির জন্য জেলখানা চোখের পানি ফেলার স্থান।আমি অপরাধী না নিরপরাধ সেটা পরে আলোচনা করবো।কিন্তু আমার জন্য জেলখানায় থাকা অতি জরুরী ছিল। কারণ এই অভিজ্ঞতা লাখ টাকার অভিজ্ঞতা। যাই হোক দশ দিন পার হবার পর আমাকে সহ অন্যান্য বন্দীদেরকে পাঠিয়ে দেয়া হলো ওয়ার্ডে।আমার লকাপ হলো যমুনা ৬/১ (চলবে)