চাকরির উদ্দেশ্যে বৈধ ভিসায় মালয়েশিয়ায় গিয়ে যেসব প্রবাসী মানবেতর জীবন যাপন করছেন, তাঁদের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দেশটির সরকার।
তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে জানায়, মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি) ওই দুই ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক লেনদেন পেয়েছে। এমএসিসি ২০টিরও বেশি ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। রিমান্ডে নেওয়া দুই কর্মকর্তার ৩১ লাখ মালয়েশীয় রিঙ্গিত (প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা) জব্দ করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের মুখ্য কমিশনার আজম বাকি বলেন, দুর্নীতি দমন, সন্ত্রাসবিরোধী অর্থায়ন ও বেআইনি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ আইনে দুজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ তদন্তে সিতি লিয়ানা সাকিজান নামের এক নারীর খোঁজ করছে। তাঁর বিষয়ে কোনো তথ্য থাকলে তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়রাজ রাজনের সঙ্গে ০১৬৬৩৭১০৮২ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
বিদেশি কর্মী নিয়োগে চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী ভি শিবকুমারকে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন এরই মধ্যে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তারই পটভূমিতে দুই কর্মীকে ঢাকা থেকে ফিরিয়ে নিয়ে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়ার তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত মাসে ঢাকায় সৌদি দূতাবাসে ভিসা দেওয়ার নামে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের দুই কর্মকর্তা ও সাত বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। সৌদির ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঢাকায় প্রায় পাঁচ কোটি ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল (প্রায় ১৫৪ কোটি টাকা) ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
প্রবাসীদের দুর্ভোগের বিষয়ে তদন্ত : মালয়েশিয়ায় গত ছয় মাস ধরে ১০ হাজার বিদেশি কর্মী মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পাসপোর্ট ও ভিসার জটিলতায় তাঁদের অনেকে আটকও হচ্ছেন। দুূর্ভোগের শিকার এসব কর্মীর মধ্যে বাংলাদেশি কর্মীও রয়েছেন। বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে মালয়েশিয়ায় এসে এসব প্রবাসী চাকরি না পেয়ে কেন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন।
গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় আসার জন্য বিদেশি কর্মীদের দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ বেশি অর্থ দিতে হয়। বাংলাদেশি কর্মীদের সবচেয়ে বেশি অভিবাসন খরচ বহন করতে হয়। এ ছাড়া বার্মিজ ও নেপালি শ্রমিকদেরও খরচ বেড়ে গেছে। কেন অভিবাসন খরচ বৃদ্ধি পেল তা নিয়েও দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে তদন্ত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্তের আগে কোনো কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।