সূত্র জানায়, প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা ও প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। এর আগে গত ৭ এপ্রিল সরকার প্রতি কেজি খোলা চিনি ১০৪ টাকা আর প্যাকেটজাত চিনি ১০৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি বলেন, প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা এবং প্যাকেট ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। এই সিদ্ধান্ত গতকাল বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, মিল মালিকরা প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২৫ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিলেন।
ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারি বাজারে ছয় হাজার ২৮০ টাকার নিচে চিনির বস্তা (৫০ কেজি) মিলছে না। দেড় সপ্তাহ আগেও যা পাঁচ হাজার ৮৫০ টাকা ছিল।
এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে ন্যায্য মূল্যে সরবরাহের জন্য ২১৫ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার টাকার সয়াবিন তেল ও চিনি কিনবে সরকার, যা সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। এ জন্য গতকাল অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সিঙ্গাপুরের একটি কম্পানি থেকে চিনি ও ভারতের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে সয়াবিন তেল কেনার দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জুম প্ল্যাটফরমে সাংবাদিকদের বলেন, ১৪৮ কোটি ৩০ লাখ ২০ হাজার টাকার সয়াবিন তেল এবং ৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার চিনি কেনা হবে। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ৮২ টাকা ৯৪ পয়সা ও প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম পড়বে ১৪৬ টাকা ১০ পয়সা।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে, বছরে দেশে চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন। অর্থাৎ প্রতিদিন পাঁচ হাজার ৪৭৯ টন চিনির চাহিদা রয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে গত বছরের শুরুর দিক থেকে বিশ্ববাজারে চিনির দাম বাড়তে থাকে। গত বছরের মে মাসের শুরুতে দেশের বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয় ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। এর পরই বাড়তে থাকে দাম। চলতি বছর এপ্রিলে দাম বেড়ে হয় ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। এপ্রিলের শেষে আরো বেড়ে দাঁড়ায় ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। বর্তমানে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
দেশের বাজারে দাম কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চিনি আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কও কমিয়েছে সরকার। এই শুল্কছাড় আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বহাল থাকবে। খসড়া হিসাব অনুযায়ী, এ সুবিধার পর অপরিশোধিত প্রতি কেজি চিনির ওপর থেকে শুল্ক সাত টাকা এবং পরিশোধিত চিনির ওপর থেকে ১০ টাকা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে বাজারে চিনির দাম কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করছে রাজস্ব বোর্ড। কিন্তু বাজারচিত্র বলছে, চিনির দাম কমেনি, উল্টো দফায় দফায় বেড়েছে।