1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ হয়রানিমূলক ধারা বাদ, বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ সীমিত আরব বসন্ত ও বাংলাদেশ বিশ্বের ক্ষুদ্রতম নদী রো আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ষষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলী তিন বাহিনীর পোশাকের ডিজাইনারকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন শিল্পী আসিফ আকবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম এলাকায় গাছ থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার শুধু রাজস্ব আদায় করবে এনবিআর বাঁওড় ইজারা বাতিল করে জেলেদের স্বার্থে জলমহাল নীতিমালা প্রণয়নে দেশব্যাপী স্মারকলিপি পেশ অভিনয়ের বাইরে র‌্যাম্পেও ঝলমলে রুনা খান অতি বিপ্লবী চিন্তা-ভাবনা নিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি কাম্য নয়: মির্জা ফখরুল

এখন কিছু মানুষ কেন গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে?

মজিব রহমান
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩
নগররাষ্ট্র এথেন্সে গণতন্ত্র ছিল বলেই সেখানে জ্ঞানের মেলা বসেছিল। মানুষ মন খুলে কথা বলার জন্য আসতো এথেন্সে। দেবতা নিয়ে অন্ধ বিশ্বাসের বাইরে গিয়ে তাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক কথা বলা। থেলিস বলেছিল- দেবতারা মানুষ সৃষ্টি করেনি, মানুষের উৎপত্তি হয়েছে পানি থেকে। থেলিসের শিস্য এনাক্সিমিনডার বলেছেন, দেবতারা প্রাণীদের সৃষ্টি করেন নি। প্রাণীরা এসেছে অন্য কিছু থেকে। আরেক শিস্য এনাক্সিমিনেস বলেছেন, দেবতারা প্রাণীর জন্ম দেননি। তারা এসেছে বাতাস থেকে। মিলেটাস নগরীর এই তিন জ্ঞানীর কথা এথেন্সে অনুশীলন করা সম্ভব ছিল গণতন্ত্রের কারণেই। এথেন্সে জ্ঞানীদের এমন মিলন মেলা এমনিতেই ঘটেনি। সেখানে জ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতাও ছিল। জ্ঞানীদের সম্মানও ছিল।
এরপর জ্ঞানের বিচরণ দেখি ফ্রান্সে। ১৭৮৯ সালে ফ্রান্সের রাজতন্ত্রের পতনের পরে যত বিশৃঙ্ক্ষলাই হোক ফ্রান্সে শিল্পী-সাহিত্যিকরা ভীর করেছে। এসময় বৃটিশদের মতো বিশ্বজুড়ে তারাও সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছে। আজ পাশ্চাত্যের দিকে তাকালে আমরা একটা জিনিসই দেখি আর তা হল– গণতন্ত্র। গণতন্ত্র থাকলেই মানুষ মতপ্রকাশ করতে পারে এবং ভিন্নমত নিয়ে আলোচনা হতে হতে প্রকৃত সত্যটাই সামনে আসতে পারে। পাশ্চাত্য দেশগুলোর এই উন্নয়নের মূলমন্ত্র অবশ্যই গণতন্ত্র। তারা যে শিক্ষা পেয়েছে, বিজ্ঞান পেয়েছে, শিল্প-সাহিত্য পেয়েছে তার সবই পেয়েছে ওই গণতন্ত্রের কল্যাণেই। পাশ্চাত্য দেশগুলোর উন্নয়নের সাথে আমরা জাপান ও সিংগাপুরকেও মেলাতে পারি। এশিয়ার মধ্যে এ দুটো দেশেও ভাল গণতন্ত্র রয়েছে। আজ ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডকে বিবেচনায় রাখতে পারি। বিস্ময়কর যে সর্বত্রেই সুষ্ঠুধারার গণতান্ত্রিক চর্চা চোখে পড়বে।
বিপরীতে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের দিকে তাকাতে পারি। অধিকাংশ দেশই ভাসছে তেলের উপর। এতো পেট্রোডলারও তাদের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটাতে পারেনি। শিক্ষায়, সংস্কৃতিতে, বিজ্ঞানে তারা বহু পেছনে রয়েছে। আবার মিলটাও একই রকম। মধ্যপ্রাচ্যের কোথাও গণতন্ত্র নেই। ইরাণে খুবই সীমিত আকারের গণতন্ত্র রয়েছে। সেখানে কে প্রার্থী হবে বা না হবে তা আগেই নির্ধারণ করে দেয়া হয়। ফলে ইরাণে প্রকৃতপ্রস্তাবে কোন গণতন্ত্র নেই। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কেন মায়ানমারের? কারণ মায়ানমারেই কোনরূপ গণতন্ত্র নেই। আগে খুবই সীমিত অবস্থায় ছিল না থাকার মতোই। এখনতো আবার চেপে বসেছে সামরিক শাসন।
চীনের কথা অনেকে বলবেন। কিন্তু চিনের কমিউনিস্ট পার্টি খুবই শক্তিশালী গণতন্ত্র চর্চা করে। চীনে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। এই সদস্যরাই নেতা নির্বাচনে ভূমিকা রাখে। আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় কংগ্রেস দু’টি প্রধান কার্য সম্পাদন করে, যথা দলীয় সংবিধানে নীতি সংক্রান্ত সংশোধনীসমূহ অনুমোদন করা এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যবৃন্দকে নির্বাচিত করা। কেন্দ্রীয় কমিটির কাজ হল দলের পলিটব্যুরোর সদস্যবৃন্দকে নির্বাচিত করা। কার্যক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটব্যুরোর নির্বাচন প্রক্রিয়া পার্টি কংগ্রেস আযোজিত হওয়ার পূর্বেই অনুষ্ঠিত হয় এবং পার্টি কংগ্রেসের মূল কাজ হল দলীয় নীতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসমূহের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা। দলে ক্ষমতার মূল কেন্দ্র হল পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটি। স্ট্যান্ডিং কমিটি এবং পলিটব্যুরোর সদস্যবৃন্দের নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্দার অন্তরালে পার্টি কংগ্রেসের সঙ্গে সমান্তরালভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যসংখ্যা প্রত্যেকবারই পরিবর্তিত হয় এবং প্রবণতা অনুসারে সেই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। এ কারণেই চীনের নেতৃবৃন্দ জবাবদিহিতার বাইরে যেতে পারে না। চীনের উন্নয়নের পেছনে এই গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বড় ভূমিকা রাখে। বিষয়টি আমাদের দেশের অনেকেই জানেন না। তারা অগণতান্ত্রিকতায় উন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে চীনকে ভুলভাবে দেখায়।
গণতন্ত্র থাকলে নেতাদের একদিকে জবাবদিহিতা করতে হয় আবার অন্য দিকে তাদের জনগণের কাছে যেতেই হয়। প্রতিটি ভোটের সময় তাদের প্রতিশ্রুতি নিয়ে যেতেই হয়, সারা বছরই জনগণের পাশে থাকতে হয়। জনগণ হিসেবে মিলিয়ে দেখে নেতা কতটা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে আর কতটা তাদের পাশে ছিল। নেতা যদি দুর্নীতি ও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তবে তাকে পরবর্তী সরকার বিচারের আওতায়ও আনবে এবং লুণ্ঠন করা অর্থ রাজকোষে ফিরিয়ে আনবে। গণতন্ত্র না থাকলে নেতা হয়ে উঠবে জবাবদিহিতাহীন এবং জনগণের সাথে সম্পর্কহীন প্রচণ্ড স্বৈরশাসক। দেশে আবারো ঘোষণা করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। রাষ্ট্র যদি তার জনগণের কথা ন্যূনতম ভাবে তবে অবশ্যই নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু করবে। আর যদি দেশকে মিয়ানমারের পথেই নিতে চায় তবে গণতন্ত্রের বালাই থাকবে না। মিয়ানমারের সরকার ও নাগরিকগণ পৃথিবীতে সম্মান নিয়ে বাঁচে না। সুষ্ঠু গণতন্ত্রহীন কোন দেশই নাগরিকদের সম্মানের চোখে দেখে না, জনগণের কল্যাণে রাষ্ট্র থাকে না। বিস্ময়কর যে, বর্তমানে কল্যাণ রাষ্ট্রের খেতাব পাওয়া সবগুলো দেশও গণতান্ত্রিক! বাস্তবতা হল- ওসব দেশে গণতন্ত্র ছিল বলেই আস্তে আস্তে কল্যাণ রাষ্ট্র হতে পেরেছে। কল্যাণ রাষ্ট্রের তালিকাটা একটু দেখুন- সুইডেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, হল্যান্ড, জার্মানি ও নিউজিল্যান্ড। এ রাষ্ট্রগুলোতে গণতন্ত্রের শক্তিটা দেখুন।
অল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের প্রথম সভাপতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে বলা হতো গণতন্ত্রের মানসপুত্র। তিনি বাস্তবিক অর্থেই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য একসময় শেখ হাসিনাও সংগ্রাম করে গণতন্ত্রের মানসকন্যা খেতাব পেয়েছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের প্রথম সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানি, এর পরের সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু আজ এমন কিছু মানুষকে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখি যারা একসময় গণতন্ত্রের জন্য মায়াকান্না কাঁদতেন। তারা এখন মনে করেন দেশের উন্নয়নের জন্য স্বৈরতন্ত্রই দরকার। গণতন্ত্র হল মূর্খের শাসন। মূর্খদের মতামত নিয়ে শাসন করলে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। তারা কি আইয়ুব খান বা এরশাদের পক্ষে কথা বলছে? সেই কথা যে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে করা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে যাচ্ছে এবং নব্বই এর শেখ হাসিনার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিপক্ষে যাচ্ছে তা বুঝতে পারছেন না।
গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলা যে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপক্ষে কথা বলা সেটাও বুঝতে চাচ্ছেন না অনেকে। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলা যে এরশাদের পক্ষে কথা বলা সেটাও অনেকে মনে রাখতে চাচ্ছেন না। যারা সুষ্ঠু গণতন্ত্রের কথা বলতে চান তাদেরকে সন্দেহের চোখেও অনেকে দেখছেন। তাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বানিয়ে দিচ্ছেন। আমি নিশ্চিত করেই জানি, এই লোকগুলোই আবার পল্টি খাবে এবং একদিন গণতন্ত্রের জন্য কুমিরাশ্রু বিসর্জন দিবে। তখন যদি আপনাদের আজকের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে করা মন্তব্যের জন্য চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেই তখন কি বলবেন, তা আজই ভেবে রাখুন। আপনার কর্মীদের কি বুঝ দিবেন এখনই ভেবে রাখুন। তারাতো মনোবল ধরে রাখতে পারবেন না। তাদের অনেকেরই দেশপ্রেম রয়েছে। আপনি কেন গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তা কিন্তু সবাই বুঝতে পারে।
গণতন্ত্রের কথা আমাদের ভাবতেই হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার চেষ্টা আমাদের করতেই হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews