দেশে লোডশেডিং কমে এসে স্বস্তি ফিরেছে জনজীবনে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তাপমাত্রা কমে বিদ্যুতের চাহিদা কমেছে। এতে লোডশেডিং আগের চেয়ে বেশ কমেছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার বিকেল ৫টার সময় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১১ হাজার ৬৭০ মেগাওয়াট। উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৫৬০ মেগাওয়াট। এই সময় লোডশেডিং ছিল মাত্র ১১০ মেগাওয়াট। তিন দিন আগেও দিনের এই সময়ে দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং ছিল।গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে দুই সপ্তাহ ধরে চলা তাপপ্রবাহ কমেছে। কমেছে বিদ্যুতের চাহিদাও। জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়েছে ভারতের আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদিত বাড়তি বিদ্যুৎ।
রাজধানীতে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী দুই বিতরণ কম্পানিকে গতকালও লোডশেডিং করতে হয়নি। এতে রাজধানীর মানুষ লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছে। তবে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং পুরোপুরিভাবে না কমলেও আগের তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে বলে গ্রাহকরা জানিয়েছেন।
টানা দুই সপ্তাহ তাপপ্রবাহ ও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে হাঁপিয়ে ওঠে সারা দেশের মানুষ। রাতভর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়।
অনেকে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। জ্বালানিসংকটের কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চাহিদানুযায়ী উৎপাদন বাড়াতে পারছিল না। এতে দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে ঘাটতি ছিল তিন হাজার মেগাওয়াটের মতো। এই ঘাটতি পূরণে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে লোডশেডিং করতে হয় দেশের ছয়টি বিতরণ কম্পানিকে। ঢাকায় গড়ে চার-পাঁচ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হলেও বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছিল।
গত বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল পর্যন্ত বৃষ্টিতে ঢাকার তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। কয়েক দিন ধরে যা ছিল ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে বিদ্যুতের চাহিদা কমে গেছে।
ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানির এমডি বিকাশ দেওয়ান গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের বিতরণ এলাকায় এখন কোনো লোডশেডিং নেই। আমাদের যা চাহিদা, তা-ই সরবরাহ করতে পারছি। আজ (গতকাল) আমাদের বিতরণ এলাকায় সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৫৮০ মেগাওয়াট। পুরোটাই সরবরাহ করা হয়েছে।’
আদানির বিদ্যুতের সরবরাহ বেড়েছে
ভারতের ঝাড়খণ্ডে নির্মিত আদানি গ্রুপের চালু প্রথম ইউনিট থেকে ৭৫০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ। গত বুধবার থেকে দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। এতে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ বেড়েছে। দ্বিতীয় ইউনিটটি পূর্ণ ক্ষমতায় চালানো হচ্ছে। দুই ইউনিট থেকে এখন এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ আসছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট