1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ হয়রানিমূলক ধারা বাদ, বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ সীমিত আরব বসন্ত ও বাংলাদেশ বিশ্বের ক্ষুদ্রতম নদী রো আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ষষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলী তিন বাহিনীর পোশাকের ডিজাইনারকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন শিল্পী আসিফ আকবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম এলাকায় গাছ থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার শুধু রাজস্ব আদায় করবে এনবিআর বাঁওড় ইজারা বাতিল করে জেলেদের স্বার্থে জলমহাল নীতিমালা প্রণয়নে দেশব্যাপী স্মারকলিপি পেশ অভিনয়ের বাইরে র‌্যাম্পেও ঝলমলে রুনা খান অতি বিপ্লবী চিন্তা-ভাবনা নিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি কাম্য নয়: মির্জা ফখরুল

বহু ও শিশু বিবাহ— নজির ও বাস্তবতা!

মজিব রহমান
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ জুন, ২০২৩
প্রেরিত পুরুষ ছাড়াও বিশ্বজুড়েই আদি ও মধ্যযুগে প্রভাবশালীরা বহু বিয়ে বা বহু নারীর যৌনসংগই লাভ করেছেন। তারা অহরহই শিশু কন্যা বিয়ে করতেন৷ আদি কালে যখন বিবাহ প্রথা ছিল না তখন নারী বা পুরুষ উভয়েই ছিলেন বহুগামী। শরীরে হরমোন নির্গত হলে যৌন চাহিদা তৈরি হয়। ঘরের নারীর পরিবর্তে পর-নারীর প্রতিই মানুষ বেশি আকৃষ্ট হয়, বেশি তাড়না বোধ করে। কিন্তু শিক্ষা, সচেতনতা, আইন, প্রথা ও সংসার-সঙ্গিনীর কথা চিন্তা করেই মানুষ একগামী থাকে। একগামী থাকার সংস্কৃতির মধ্যে পুরুষরা রয়েছে অল্পদিন ধরেই। তাদের স্বার্থই ধর্মগ্রন্থগুলো রক্ষা করেছে। একসময় এসব সুযোগ পুরুষরা উপভোগ করেছে আর আজ সভ্যতা তাদের দিয়েই এর নিন্দা করাচ্ছে। এটাই অগ্রগতি, এটাই সভ্যতা।
নবী মুহাম্মদ সা. এর স্ত্রী/সঙ্গিনীর তথ্য আমরা বিভিন্ন রকম পাই। গোলাম মোস্তফা রচিত সিরাত গ্রন্থ ‘বিশ্বনবী’তে আমরা ১৪জন স্ত্রীর সংবাদ পাই। ইরানের আলী দস্তির লেখা ‘নবী মহম্মদের ২৩ বছর’ গ্রন্থে পাই ১৯+৫=২৪ জন স্ত্রী/সঙ্গিনীর কথা। তাঁর পরবর্তী নেতাদের অনেকেইর একসাথে চারটি স্ত্রী থাকলেও আগে পরে আরো অনেক বিবাহ করতে দেখি এবং বহু দাসীদের সাথে সংসর্গের কথাও দেখি। এটা নিয়ে প্রায়শই হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে ঝামেলা লেগে যায়। আমরা হিন্দু ধর্মে দেখি শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রীর সংখ্যা ১৬১০৮ জন। রাধা তাঁর প্রণয়নী, স্ত্রী নন। শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনে আমরা দেখি রাধার সাথে কৃষ্ণের সংসর্গও হয়েছিল তিনবার। মহাভারত ও রামায়নে আরো অনেকেরই বহু বিবাহর সন্ধান পাই। রাজা দশরথের স্ত্রী ছিল ৭৫০ জন। এছাড়া বহু দেবতাকেই দেখি যেখানে সেখানে সংসর্গ ঘটাতে। এটা নিয়ে হাঙ্গামা কেন? সত্যকে নিতে হয় সহজে। দুপক্ষই তুলে ধরতে পারে সত্য কথাগুলো রেফারেন্স সহ। বাহাস চলুক!
আরবে ওই সময় বহু ও শিশু বিবাহ ছিল বিচিত্র রকমের । ধরুন হযরত আলী রা. এর প্রথম স্ত্রী ফাতেমা রা. ছিলেন হযরত মুহামম্দ সা. এর কন্যা। দ্বিতীয় স্ত্রী উমামা বিনতে আবিল আস ছিলেন মুহাম্মাদ (স:) এর নাতনী ও সাহাবা। মুহাম্মাদ (স:) এর কন্যা জয়নব বিনতে মুহাম্মাদ এর মেয়ে ছিলেন উমামা। আবার আলী রা. ও নবিজী ছিলেন চাচাতো ভাই। আলী রা. এর মোট ৭জন স্ত্রীর আরেকজন হলেন আসমা বিনতে উমাইস বা আসমা বিনতে আমিসা। আসমার মা হিন্দ বিনতে আওফের সন্তানাদির মধ্যে দুই কন্যা ছিলেন মুহাম্মাদ (সা.) এর স্ত্রী। একজন হলেন জয়নব বিনতে খুযায়মা এবং অন্যজন মায়মুনা বিনতে আল-হারিস। আসমা পর্যায়ক্রমে খলিফা আবু বকর ও আলী এবং বিশিষ্ট সাহাবা আবু জাফর ইবনে আবু তালিবের স্ত্রী ছিলেন। আবার আবু বকর রা. এর ৬ বছরের কন্যা আয়শা রা.কে বিয়ে করেন নবী মুহাম্মদ সা.৷ আরবের কালচারটা বুঝার জন্য উদাহরণ দিচ্ছি। আজও আরবে প্রভাবশালীরা বহু ও শিশু বিবাহ করছেন আবার গৃহকর্মীদের সাথেও জোর করে সেক্স করছেন৷ খলিফা ওমর রা. নবীজীর কন্যা ফাতেমা রা. এর মেয়ে উম্মে কুলসুম বিনতে আলীকে বিয়ে করেন। আবার ওমর রা. এর মেয়ে হাফসা রা. কে নবি মুহাম্মদ সা. বিয়ে করেন। এই বিষয়টা নিয়ে পোস্ট করেই তিথি সরকার জেল খাটেন।
তবে শুধু ধর্ম প্রচারকগণই বহু বিবাহ করেছেন তা নয়। মহামতি সম্রাট আকবরের স্ত্রী ছিল ৫ হাজারের বেশি। অবশ্য আকবরও একটি ধর্ম প্রবর্তন করেছিলেন৷ তুরষ্কের শাসকদের হেরেমে স্ত্রীর অভাব ছিল না। চেঙ্গিশ খানের কথা বলা হয়- ‘মধ্য এশিয়া জুড়েই তার বংশধর রয়েছে’। এর কারণ হল প্রতিদিনই তিনি বহু নারীকে ধর্ষণ করতেন। ধর্ষিতারা কোথায় কোন সন্তান জন্ম দিতেন তার হিসাব ছিল না৷ চেঙ্গিশ খান যেমন মহামানব ছিলেন আবার মহা কামুকও ছিলেন। বাঙালি দীর্ঘকাল যাবতই অল্প বয়সে বিয়ে করে আসছে। শিশু বিয়ের লক্ষ লক্ষ গল্প রয়েছে বাংলায়। ৬/৭ বছরের শিশুদের বিয়ে হতো অহরহই। তারা যৌনতাকে অত্যাচারই মনে করতো। কোন মেয়েই স্বামীর বাড়িতে আসতে চাইতো না। বহু কান্নকাটি করতো পিতার বাড়িতে থাকার জন্য। কারণ স্বামীর বাড়িতে গেলেই যৌন নিপীড়নের মুখে পড়তে হতো। অনেক শিশু-স্ত্রীই সন্ধ্যা হলেই জঙ্গলে বসে মশার কামড় খেতো সাপের ভয় উপেক্ষা করে তবু স্বামীর ঘরে আসতে চাইতো না।
বাঙালি মহামানবদের কথায় আসি। প্রথম বাঙালি বিচারপতি বিক্রমপুরের চন্দ্রমাধব ঘোষ বিয়ে করেন ৬ বছর বয়সী হেমন্ত কুমারীকে। তখন চন্দ্রমাধবের বয়স মাত্র ১১। হেমন্ত কুমারীও ঢাকার বিখ্যাত রায়চৌধুরী পরিবারের কন্যা। তাহলে কেন এমন বিবাহ? এটাকে ওই দুই পরিবারের সংস্কৃতি বলেই দাবি করেছেন চন্দ্রমাধব ঘোষের জীবনী লেখক প্রবোধ গোপাল বসু। আমাদের ভাগ্যকুলের বিখ্যাত জমিদারগণ অধিকাংশই বাল্যকালে বিবাহ করেছেন আবার এই পরিবারের মেয়েদের শিশুকালেই বিয়ে দেয়া হয়েছে। রাজা শ্রীনাথ রায় বিয়ে করেন মাত্র ১১ বছর বয়সে বিক্রমপুরের তারাটিয়া গ্রামের প্রসাদচন্দ্র দের শিশুকন্যা তীর্থময়ীকে। বিয়ের বহু বছর পরে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। শ্রীনাথের ভাই রাজা জানকীনাথ রায়ও অল্প বয়সে বিয়ে করেন লৌহজং এর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রামকান্ত তালুকদারের কন্যা যশোদাময়ীকে। দুই শিশুকেই জীবনী গ্রন্থাকার দেবেন্দ্রনাথ দে অল্পবয়স্কা সুন্দরী হিসেবে অভিহিত করেছেন। আমরা দেখেছি এমন অল্পবয়স্কা সুন্দরী নারীরা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণও করেছেন। কিন্তু জমিদারগণ আবারো অল্প বয়স্কা শিশুকেই বিয়ে করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বয়স যখন ১৩ তখন মাত্র ৩ বছরের বেগম ফজিলাতুন্নেসা রেনুর সাথে বিয়ে পাকা হয়। যখন তাদের দাম্পত্য জীবন শুরু হয় তখন বেগম ফজিলাতুন্নেসার বয়স ছিল ৮ এবং বঙ্গবন্ধুর বয়স ছিল ১৮।
বাঙালির সাহিত্যাকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কি করেছেন? তিনি ১৮৮৩ সালে বিয়ে করেন যখন তাঁর বয়স ২২ বছর। কিন্তু স্ত্রী ভবতারিণীর বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। সুন্দরী শিশুকন্যা ভবতারিণী ছিলেন তাদেরই এক অধস্তন কর্মচারীর মেয়ে। পরে রবীন্দ্রনাথ নাম বদলিয়ে রাখেন মৃণালিনী দেবী। রবীন্দ্রনাথ তার কন্যাদেরও অল্প বয়সে বিয়ে দেন৷ একই বছর রবীন্দ্রনাথ ও মহাত্মা গান্ধী বিয়ে করেন। গান্ধী রবীন্দ্রনাথের চেয়ে ৮/৯ বছরের ছোট। ১৮৮৩ সালে তাঁর বয়স মাত্র ১৩ বছর। তাঁর স্ত্রী কস্তুরবা মাখাঞ্জী (কাস্তুবাই) তখন প্রায় সমবয়সী শিশু। মহাত্মা গান্ধী পতিতালয়েও যেতেন। পাশের ঘরে তাঁর পিতা মৃত্যুশয্যায় তখনও তিনি ছিলেন স্ত্রী রমনে ব্যস্ত। এ কারণে পিতার মৃত্যুক্ষণেও তিনি উপস্থিত থাকতে পারেন নি। শিশু বয়সে বিয়ের কারণে তার প্রথম সন্তানও জন্মের পরপরই মারা যায়। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১১ বছর বয়সে ৫ বছরের বালিকা মোহিনী দেবীকে বিয়ে করেন। এই স্ত্রীর মৃত্যুর পরে তিনি ২২ বছর বয়সে ১২ বছরের রাজলক্ষ্মী দেবীকে বিয়ে করেন। মোহিনী তার কবিতার খাতা ছিড়ে পুতুল খেলতো!
আমরা কি মহাত্মা গান্ধীকে গালি দিব? রবীন্দ্রনাথকে? বঙ্কিম বা বঙ্গবন্ধুকে? নাকি প্রথম বাঙালি বিচারপতির দিকে আঙুল তুলবো? বাস্তবিক এই পাঁচ মহান ব্যক্তিত্বকেই আমরা সম্মান করি। শিশু বিয়েকে প্রথা হিসেবেই মেনে নেই। রাজা শ্রীনাথ রায় ও রাজা জানকী নাথ রায়ের অনেক অবদান রয়েছে। সম্রাট আকবরকে বলা হয় দ্য গ্রেট, বাংলায় বলি মহামতি! চেঙ্গিস খানও দ্য গ্রেট!
মহামানব বা প্রেরিত পুরুষদের বহু বিবাহতো সত্য ঘটনা। এ নিয়ে এতো হইচই না করে আমরা তাদের জীবন জানতে পারি। তাদের জীবনে বহু বিবাহ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলেও এরচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। আমরা সবকিছুই আলোচনাই করতে পারি। কেউ মিথ্যা বললে আমরা রেফারেন্স দিয়ে বলতে পারি সত্যটা। এরপরেও কেউ মিথ্যা বললে সেইতো মিথ্যাবাদী হবে। আপনি মিথ্যা না বলে সত্য বলে সত্যবাদীই থাকুন। সবাইকে সত্যটা সহজে মেনে নিতে হবে। আমাদেরতো সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যগুলোকে জানতে হবে৷ মন্দকে সরিয়ে দিয়ে আধুনিক, সভ্য ও বিজ্ঞানমনষ্ক সমাজই গঠন করতে হবে৷

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews