মো. জালাল উদ্দিন মিয়া ও অন্য বনাম আলহাজ আবদুল আওয়াল ও অন্যান্য মামলার রায়ে এসব পরামর্শ দিয়েছেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ।
গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার পর সম্প্রতি ৩১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। পূর্ণাঙ্গ রায়ে ১৫ দফা পরামর্শ ও ২টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অনলাইনে মামলা ব্যবস্থাপনা-কার্যতালিকা প্রকাশ, দেশের বাইরে বিচারকদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, দেওয়ানী কার্যবিধি ১৯০৮, দেওয়ানী বিধি-আদেশ ও ম্যানুয়ালের ব্যাপক সংশোধন এবং যুগপযোগী করার পরামর্শ রয়েছে এই ১৫ দফার মধ্যে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিচারককে দক্ষ করে তৈরি করতে হবে।
এরপর একজন বিচারককে বিচারকাজ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে। তবেই অযৌক্তিক, বেআইনি ও হয়রানিমূলক মোকদ্দমা থেকে বিচার বিভাগ যেমন মুক্ত হবে, তেমনি মামলা জটও কমবে।
রায়ে বলা হয়েছে, পরামর্শগুলো গ্রহন করে তা কার্যকর করা হলে বিচার ব্যবস্থার ভয়াবহ মামলা জট থেকে অনেকটাই বেরিয়ে আসা যাবে। আইন মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে জনগণের বিচার পাওয়ার পথ সুগম করবে বলে প্রত্যাশা আদালতের।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন হস্তান্তর সংক্রান্ত স্মারক বেআইনি এবং বাদী এ স্মারক মানতে বাধ্য নন মর্মে ঘোষণা চেয়ে ২০০৩ সালের ২৯ মে একটি দেওয়ানী মোকদ্দমার আরজি দায়ের করা হয়। শুনানি শেষে কুষ্টিয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ ওই বছররের ২২ জুন তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং অস্থায়ী ও অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত সরাসরি নামঞ্জুর করেন।
এ আদেশ ও রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে বাদী কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করলে ২০০৫ সালের ১৬ আগস্ট আপিল মঞ্জুর করে রায় দেন আদালত। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা করেন বিবাদিপক্ষ। প্রাথমিক শুনানির পর আদালত প্রথমে রুল জারি করেন।
চূড়ান্ত শুনানির পর রুলটি নিষ্পত্তি করে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রায় ও ডিক্রি বাতিল করার পাশাপাশি কুষ্টিয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজের রায় ও আদেশ বহাল রাখা হয়।