ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় মাদক না পেয়েও মাদক দিয়ে এক অসুস্থ হোটেল শ্রমিককে ফাঁসানো সহ অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার (২১ জুন) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন কার্য্যালয়ের একটি দল মধুগঞ্জ বাজার ঢাকালে পাড়ায় প্রায় ৪ ঘন্টা ব্যাপী এ অভিযান পরিচালনা করেন। মাদক উদ্ধারে এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন ঝিনাইদহ মাদক নিয়ন্ত্রন অফিসের উপ পরিদর্শক আলতাফ হোসেন।
এই সময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিদর্শক মোহাম্মদ বোরহানুর রহমান মৃধা, সহকারী পরিদর্শক আব্দুর রশিদ, সহকারী পরিদর্শক পাপিয়া সুলতানা,ড্রাইভার ইদ্রিস মোল্যাসহ কয়েকজন।
অভিযানের সময় এক ঘুমন্ত হোটেল শ্রমিককে মাদক মামলায় ফাঁসানোসহ মোট ৭৪ হাজার টাকা অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ঐ আভিযানিক দলের বিরুদ্ধে। এ ব্যপারে সংবাদ সংগ্রহ করতে উপপরিদর্শন আলতাফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিককেও রুপসা গাড়ির ভিতর থেকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
ঢাকালে পাড়ার বাসিন্দা জুয়েল রানা বলেন,আমার বাড়িতে কয়েকদিন ধরে উপজেলার সোনালীডাঙ্গা গ্রামের গোলাম নবীর ছেলে আলমগীর হোসেন নামে এক আত্মীয় অবস্থান করছিল। সে থ্রি স্টার হোটেলে মিষ্টি তৈরির কাজ করে। অভিযানের দিন মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অফিসের কয়েকজন ব্যক্তি আমার শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে তল্লাশি করতে থাকে। এক পর্যায়ে কোন মাদক না পেয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় আলমগীরকে ডেকে আমারসহ তাকে হাতকড়া পরিয়ে ১৭ পিস ইয়াবার কৌটা হাতে ধরিয়ে দেন উপ পরিদর্শক আলতাফ হোসেন।
এ সময় জুয়েল ও তার সহধর্মিনীকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর ভয়ভীতি দেখিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। সেখানে উপস্থিত এই মামলার এক নম্বর সাক্ষী আসাদুল জামান বাবুর মাধ্যমে দেনদরবার করে জুয়েলের সহধর্মিনী। পরবর্তীতে বাবুর হাত থেকে সহকারী পরিদর্শক আব্দুর রশিদ ৬৮ হাজার টাকা নগদ গ্রহন করেন এবং তল্লাশি সময়ে জুয়েলের মানিব্যাগ থেকে ৬ হাজার টাকাও তারা নিয়ে নেন। একই সাথে আলাদা ঘরে জুয়েল ও তার স্ত্রীর নিকট থেকে জোরপূর্বক তাদের পক্ষে ভিডিও বক্তব্য ধারণ করেন। এ সময়ে জুয়েলের বেড রুমে থাকা সিসি ক্যামেরা তারা ভাংচুর করে।
কালীঞ্জ থানার ১৩/২৩ মামলার ১নং স্বাক্ষী আসাদুল জামান বাবু ৬৮ হাজার টাকা কর্মকর্তাদের হাতে দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ঐ মামলা ২ নং আসামী একই উপজেলার দেবরাজপুর গ্রামের অধির দাসের ছেলে বিকাশ দাস মাদক উদ্ধার এবং এই মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
ঝিনাইদহ মাদক নিয়ন্ত্রন অফিসের উপ পরিদর্শক আলতাফ হোসেনের নিকটের অর্থগ্রহণ ও মাদক দিয়ে মামলা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,অভিযোগ সত্য নয়,কোথায় আছেন আপনি। আমি আপনার সাথে দেখা করব।
ঝিনাইদহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অফিসের সহকারী পরিচালক গোলক মজুমদার বলেন,অভিযোগের ব্যপারে প্রমাণ থাকলে আমাকে দেন,আমি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।