স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক বুলবুল মহলানবীশকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর পর সেখানে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে এই শ্রদ্ধানুষ্ঠানে বুলবুল মহলানবীশকে শেষ শ্রদ্ধা জানান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদ, উদীচী, সংগীত সমন্বয় পরিষদ, কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা, বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী সমিতি, অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন, ছায়ানট, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম, নবান্ন উৎসব উদযাপন পরিষদ, আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, ভাষা ও সাহিত্য কল্যাণ পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, চলচ্চিত্র ও নাট্য নির্মাতা, পত্রিকার সম্পাদকসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে বুলবুল মহলানবীশের মরদেহ রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নেওয়া হয়। সেখানে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয়। সবুজবাগ শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ গানটির অন্যতম শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ। তাঁর জন্ম ১৯৫৩ সালের ১০ মার্চ বিক্রমপুরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেন তিনি। সংগীতচর্চা ছাড়াও দীর্ঘ দিন শিক্ষকতাও করেছেন তিনি।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার পরেও বুলবুল মহলানবীশ তার লড়াই থামিয়ে দেননি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী বুলবুল মহলানবীশ একাধারে অভিনয়শিল্পী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, রম্য রচয়িতা ছিলেন।’
বর্ষীয়ান সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, ‘বুলবুলের কথা ছিল না এত আগে চলে যাওয়ার। তিনি মনেপ্রাণে ভালোবাসতেন বাংলাদেশকে, ভালোবাসতেন মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে। তিনি তার জীবদ্দশায় অসাধারণ শক্তিমান যোদ্ধার মতো কাজ করে গেছেন। আমাদেরকে শূন্য করে চলে গেছেন তিনি। কিন্তু তিনি আমাদের স্মৃতিতে থাকবেন।’