তিনি বলেন, এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম বলে একটা গ্রুপ আছে, যাদের ক্ষেত্রে অঙ্গ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে; যেমন—হার্ট, ব্রেন, অগ্ন্যাশয়ে সমস্যা হচ্ছে। এসব রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য চিকিৎসকদেরও খেয়াল রাখতে হবে, ডেঙ্গু রোগী যে শুধু জ্বর নিয়ে আসবে তা নয়। হঠাৎ অনেক বেশি বমি, ডায়রিয়া নিয়েও আসতে পারে।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) চেয়ারম্যান মো. আফতাব আলী শেখ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন : ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪। চলতি বছর জিনোম সিকোয়েন্স করে আমরা দেখেছি, ডেন-৩, ডেন-৪ বেশি।
আবার ডেন-২-এর রোগীও আছে। অর্থাৎ ডেঙ্গুর একাধিক সেরোটাইপ পাওয়া যাচ্ছে। যারা আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল, তারা নতুন একটা ধরন দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। এতে এক ধরনের কম্পাউন্ড তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ রোগীর শরীর থেকে রক্তরস বের হয়ে পেটে জমা হচ্ছে। তখন পেট ফুলে যাচ্ছে। ফুসফুসে জমা হয়ে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অনেকের প্রেশার কমে যাচ্ছে। হৃৎপিণ্ডে সমস্যা হচ্ছে, দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত বের হয়ে আসছে।
তিনি বলেন, এসব লক্ষণ হলো ডেঙ্গুর বিপদচিহ্ন। যদি কোনো রোগীর কোমরবিডিটি (পুরনো রোগ) থাকে, প্রসূতি মায়ের ক্ষেত্রে এ সমস্যা একটু জটিলতা তৈরি করছে। এ জন্য তাদের বিষয়ে আগে থেকে সতর্ক থাকা উচিত। একই সঙ্গে এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে হবে।
এক দিনে মৃত্যু ৮, ভর্তি ২১৬৮
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরো আটজন মারা গেছে। এর মধ্যে ঢাকায় তিনজন, ঢাকার বাইরে পাঁচজন। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪৯৩ জনের মৃত্যু হলো। চলতি আগস্ট মাসেই মারা গেছে ২৪২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরো দুই হাজার ১৬৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৩২৬ জন ঢাকার বাইরে। এ নিয়ে চলতি বছর এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ চার হাজার ৩৫৯। চলতি আগস্টে ৫২ হাজার ৪২৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, যা মোট রোগীর অর্ধেকের বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বর্তমানে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সাত হাজার ৯২৯ জন রোগী চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ঢাকায় তিন হাজার ৫৭০ জন ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় চার হাজার ২৫৯ জন।