ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়ন পিচ কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইসাহক আলীর বাড়িতে আমরা মুক্তিযোদ্ধাগণ আক্রমণ করি ১৮ই সেপ্টেম্বর একই দিনে মুলাডুলি-রাজাপুর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি। আমাদের কাছে খবর ছিল ইসাহক চেয়ারম্যানের বাড়িতে বিহারী ও পিচ কমিটির সদস্য গণ অবস্থান করছে।
এই সংবাদের ভিত্তিতে ১৯৭১,১৮ই সেপ্টেম্বর আমরা অপারেশন করি। কৃতজ্ঞ চিত্তে বলে রাখি, আমরা মুক্তিযোদ্ধাগণ ঐ অঞ্চলে গেলে ভাড়ই-মারীর আবুল শাহের বাড়ি ও প্রতিরাজপুর গোলজার প্রামানিকের বাড়িতে অবস্থান ও খাবার খেতাম। আমরা সবাই কামাল পুর সেল্টার সেল থেকে সন্ধ্যায় রওনা হয়ে প্রথমে প্রতিরাজ পুর আশি। এবং প্রতিরাজপুর থেকে মুলাডুলি ইক্ষু ফার্মের সুপারিনটেনডেন্টের বাসায় উঠি। এবং অপারেশনের কর্ম পরিকল্পনা করি আমাদের কোম্পানি কমান্ডার জনাব বীরমুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম মন্টু সাহেবের সঙ্গে । আমাদের সহযোদ্ধাগণ ছিলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা সফি মোল্লা (কামাল পুর),বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিক,বীরমুক্তিযোদ্ধা লালা,বীরমুক্তিযোদ্ধা মুক্তার(লক্ষ্মীকুন্ডা),বীরমুক্তিযদ্ধা আকবর(দাদাপুর),বীরমুক্তিযদ্ধা হারুন(পাবনা),বীরমুক্তিযোদ্ধা আঃরশিদ,বীরমুক্তিযোদ্ধা আঃগাফ্ফার,বীরমুক্তিযোদ্ধা ইউসুব(কামালপুর) প্রমূখ। আমাদের কোম্পানি কমান্ডার জনাব সিরাজুল ইসলাম মন্টু সাহেবের শরীর অসুস্থ বোধ করায় তিনি সুপারিনটেনডেন্টের বাসায় থেকে যায়। কোম্পানি কমান্ডার আমাকে অপারেশনের নির্দেশে দিলে, আমি যাওয়ার সময় মুলাডুলি ইক্ষু ফার্মের সুপার জনাব হাফিজুল সাহেবের কাছ থেকে জয় বাংলা পতাকা দুটি নিয়ে যায়। ইসাহক চেয়ারম্যানের বাড়িতে আক্রমণ করে আমরা কাউকে না পেয়ে মুলাডুলি বাজারে দিকে অগ্রসর হই তখন রাত এগার টা বাঁজে। মুলাডুলি বাজারে ডাক্তার লুৎফর রহমানের দোকানের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি। তার পর রাজাপুর বাজারে অগ্রসর হয়ে আলিমুদ্দীনের দোকানের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি। এটাই এ অঞ্চলে প্রথম স্বাধীন জাতীয় পতাকা উত্তোলন হিসেবে জানি। রাজাপুর থেকে নিকড় হাটা হয়ে মুলাডুলি ফার্মের ভিতর দিয়ে পরে প্রতিরাজপুরঐ রাতে অবস্থান করি আমরা সবাই। প্রকাশ থাকে যে, মুলাডুলি খাদ্য গুদামে পাকিস্তানি আর্মি দের ক্যাম্প ছিল ।ঐ অপারেশনের কর্মপরিকল্পনায় খাদ্য গুদামে পাকিস্তানের আর্মিদের আক্রমণ করার পরিকল্পনা ছিল না। তবে, বিহারী ও পিচ কমিটির সদস্যদের সাথে সংঘর্ষ হলে পাকিস্তানি আর্মি তাদের সাহায্যে আসলে আমাদের করনিও ঠিক করা ছিল। লেখা-রণাঙ্গনের বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ শরীফ উদ্দীন মাস্টারের স্মৃতি চারন থেকে নেওয়া।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট