নির্বাচনে ইইউয়ের ছোট আকারের পর্যবেক্ষকদল পাঠানোর বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা (ইইউ) ছোট দল পাঠাবে। তারা বলছে, ওই ছোট দলের খরচ আমাদের (বাংলাদেশ) দিতে হবে। আমরা এটাতে খুব আগ্রহী না। আমরা এখনো কোনো উত্তর দিইনি। শনিবার চিঠিটা এসেছে।’
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘ইইউ এটা ঘোষণা করেছে যে তারা একটি ছোট আকারের এক্সপার্ট গ্রুপ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য পাঠাবে।’ বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান জানতে চান। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কী চিন্তায় অগ্রসর হচ্ছে তা জানতে চেয়েছেন ইইউয়ের সদস্যরা।
আমরা বলেছি, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী কিছুদিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন তাদের তফসিল ঘোষণা করবে। আমরা আমাদের শিডিউল মোতাবেক নির্বাচন করব।’ ‘আজকের আলোচনার মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে তারা বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, যে সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা চাইছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা কী কী করব, সেটাও তারা জানতে চেয়েছে।’
বিএনপির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ফারুক খান বলেন, ‘তাদের বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তবে আমরা মনে করি, বিএনপি একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল, তারা আগামী নির্বাচনে আসবে বলে আশা করি।’ ‘আগামী নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করলে দেশ কিভাবে চালাব, সে বিষয়েও জানতে চেয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা। সে বিষয়ে তাঁদের আমরা অবগত করেছি। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সেই প্রশ্নের উত্তর তাঁরা পেয়ে যাবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের ইশতেহার কী রকম হবে, তাঁরা জানতে চেয়েছেন। আমরা তাঁদের ব্যাখ্যা করে বলেছি যে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দুটি দিক থাকবে। প্রথম অংশে গত নির্বাচনে আমদের ইশতেহারে যে কমিটমেন্ট ছিল, সেই কমিটমেন্ট কতটুকু আমরা পূরণ করেছি, তা জনগণকে জানাব। দ্বিতীয় অংশে আগামী পাঁচ বছর আমরা কী করতে চাই, সেটা থাকবে।’
ফারুক খান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা নিয়ে কী চিন্তা-ভাবনা করছি; বর্তমানে যে অর্থনৈতিক সংকট, সেটা নিয়ে আমরা কী চিন্তা-ভাবনা করছি—এ বিষয়গুলো বৈঠক আলোচনা হয়েছে। আমি মনে করি, সবচেয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আমাদের খুব ভালো মিটিং হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউয়ের যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক, তা খুবই চমৎকার। কিছুদিনের মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ব্রাসেলসে যাচ্ছেন। সেখানে আমাদের মধ্যে পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট হবে। এসব কথা তাঁরা বৈঠকের প্রথমেই বলেছেন।’
বৈঠকে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে চার সদস্যবিশিষ্ট অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষকদল পাঠাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আগামী নভেম্বর মাসে পর্যবেক্ষক টিম বাংলাদেশে আসবে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে তারা দেশ ত্যাগ করবে।