সরকারি দলের একাধিক সূত্র জানায়, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করা এবং মেয়াদের শেষবেলায় নিজেদের আরেকটু গুছিয়ে নিতে চাইছে সরকার। সে জন্য তারা নভেম্বরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত সময় নিতে চায়। যদিও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা বা তারিখ চূড়ান্ত করার ক্ষমতা একমাত্র নির্বাচন কমিশনের। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সরকারের সহযোগিতাও গুরুত্বপূর্ণ।
দলীয় একাধিক সূত্র মতে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সরকার শুধু নৈমিত্তিক কাজ করতে পারবে। নির্বাচনকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে এমন কোনো কাজ সরকার করতে পারবে না। যেমন—এ সময়ে প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন। চলতি অক্টোবর মাসে বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৮ ও ২৯ অক্টোবর আরো দুটি মেগাপ্রকল্প উদ্বোধন করবেন তিনি।
এর পরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উদ্বোধন বাকি থাকবে। এ প্রকল্পগুলোর উদ্বোধনের তারিখ নভেম্বরের প্রথমার্ধে নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে সরকার মনে করছে, নভেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে তাদের এই কাজগুলো করতে সুবিধা হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন খুব শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হয়ে যাবে। তখন কোনো উদ্বোধন আমরা করতে পারব না, সরকারের কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরুও করতে পারব না। তখন আমরা জাস্ট রুটিন ওয়ার্ক করব।’ ওবায়দুল কাদের রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
২০ অক্টোবর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেল উদ্বোধনের কথা ছিল। পরে তা পিছিয়ে ২৯ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে আগামী ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ মাসেই এক দিনে তাঁর দেড় শ সেতু উদ্বোধনেরও কথা রয়েছে। এ মাসে টানা ব্যস্ত থাকায় নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেও একাধিক প্রকল্প উদ্বোধনের সময় রেখেছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, নবনির্মিত দুটি রেলপথ চলতি অক্টোবর মাসেই উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ রেলপথ দুটি হলো চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার এবং খুলনা থেকে মোংলা। রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো প্রকল্পের উদ্বোধনী সার-সংক্ষেপেও অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর সময় চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বড় এই দুই প্রকল্পের উদ্বোধন চলতি মাসে হচ্ছে না।নির্বাচনের তফসিল পেছানোর জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করা হবে কি না, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সরকারের সহযোগিতা নিতে হয়। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে নানা আলোচনা করা হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে একাধিক কর্মসূচি রেখেছেন তার মানে উনি নানা বিষয় বিবেচনায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।