1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :

অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের সাথে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের মত বিনিময়

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
আজ ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ সকাল ১১.৩০ টায় ধর্মরাজিকা মহাবিহার অফিস কক্ষে উভয় সংগঠনের এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন  কতৃক দশম শতাব্দীর বাংলাদেশের বজ্রযোগিনীতে আবিস্কৃত ও খননকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক বিক্রমপুরি বৌদ্ধ মহাবিহারে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ থাইল্যান্ড থেকে আনীত ১০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট অনুপম বুদ্ধমূর্তি প্রতিস্ঠা করার সম্বভাব্যতা নিয়ে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন এর পক্ষে সভাপতি ড. নূহ-উল-আলম লেনিন এর নেতৃত্বে উপস্হিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সুফি মুস্তাফিজুর রহমান, সহ-সভাপতি প্রফেসর ঝর্ণা রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন আহমেদ জুয়েল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু হানিফ, মোঃ কবির ভূঁইয়া কেনেডি এবং সম্মানিত সদস্য সাবেক অতিরিক্ত সচিব তাহিয়াত হোসেন । বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের পক্ষে উপস্হিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি দেবপ্রিয় বড়ুয়া, সহ-সভাপতি রনজিত কুমার বড়ুয়া, সহ-সভাপতি ভদন্ত স্বরুপানন্দ ভিক্ষু, মহাসচিব পি. আর. বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব প্রফেসর ডঃ সুমন কান্তি বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব  অনুপম বড়ুয়া, আইন সচিব প্রদীপ বড়ুয়া প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
উক্ত সভায় বিস্তারিত আলাপ আলোচনার পর সকলে সার্বিক পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ ও সীমাবদ্ধতা স্মরণে রেখে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন এবং সল্পতম সময়ে থাইল্যান্ড থেকে আনীত ১০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট অনুপম বুদ্ধমূর্তি (গৌতম বুদ্ধের একটি বৃহৎ ব্রোঞ্জ মূর্তি) এবং পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের একটি ভাষ্কর্য স্থাপনের/ ইনস্টলেশন ডিজাইন তৈরী করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
 পরে তাঁরা ধর্মরাজিকা মহাবিহারে সংরক্ষিত পন্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের পবিত্র দেহভস্ম পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ এবং ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে মহাসঙ্ঘনায়ক বিশুদ্ধানন্দ দীপঙ্করের দেহভস্ম আনয়ন করার প্রসঙ্গে প্রস্তাব করেন। তখন বাঙলাদেশের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত না থাকার কারণে এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধু সুসময়ে অতীতের বাঙালি শ্রেষ্ঠ অতীশের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন। তারপর তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৮ সালে অতীশ দীপঙ্করের পবিত্র দেহভস্ম গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিদল চীনে গিয়ে উপস্থিত হন। প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন মহাসঙ্ঘনায়ক বিশুদ্ধানন্দ মহাথের, শ্রীমত শুদ্ধানন্দ মহাথের, জনাব এম, আসাফুদ্দৌলা, ড. মাহমুদ শাহ কোরেশী, অধ্যাপক রণধীর বড়ু’ ও শ্রী অশোক রঞ্জন বড়ুয়া। চীন বৌদ্ধ সমিতির প্রদান মি. ঝাউ পূ চু বাঙালি অতীশের পবিত্র দেহভস্ম বাঙলাদেশের প্রতিনিধি দলের কাছে হস্তান্তর করেন।
১৯৭৮ সালের ২৮ জুন অতীশের দেহভস্ম স্বদেশে তেজগাঁও বিমান বন্দর দিয়ে ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে এসে পৌঁছে। পুনরায় অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বত ও চীন হয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করলেন।
তিব্বতের ধর্ম, ইতিহাস, রাজকাহিনী, জীবনীগ্রন্থ, স্তোত্রগাথা এবং সর্বোপরি তাঞ্জুর নামে বিশাল শাস্ত্রগ্রন্থ-সঙ্কলনে সে দেশের ধর্ম, ঐহিত্য ও সংস্কৃতির প্রায় সবগুলো মাধ্যমের মধ্য দিয়ে অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান বা দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ তিব্বতবাসীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন আজও। বিশেষ করে অতীত তিব্বতের কোনো আলোচনাই তাকে ছাড়া সম্ভব নয়। আচার্য পন্ডিত শ্রী দীপঙ্কর জ্ঞান অভিসময় বিভঙ্গ নাম: মহাপণ্ডিত দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান বজাসন বজ গীতি: মহাপন্ডিত শ্রী দীপঙ্কর জ্ঞান বোধি পথ প্রদীপ: মহাচার্য শ্রী দীপঙ্কর জ্ঞান বিমল রত্ন লেখ নাম: স্থবির মহাপন্ডিত দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ইত্যাদি। তিব্বতী মহাগ্রন্থ তাঞ্জুরে সংরক্ষিত ঊনআশিটি গ্রন্থের একই সঙ্গে গ্রন্থকার ও অনুবাদক রূপে দীপঙ্করের নাম পাওয়া যায়। তাদের পুষ্পিকাতেও এই ধরনের বহু উদাহরণ পাওয়া যায়। এখানে আরো উল্লেখ্য যে প্রতিটি গ্রন্থের তিব্বতীয় ও মঙ্গোলীয় গ্রন্থসূচিতে গ্রন্থকাররূপে জোবেজে বা অতীশের নাম নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তাঞ্জুর ও কোর্দিয়ে-র গ্রন্থ তালিকার এই সাক্ষ্য থেকে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে এই গ্রন্থগুলিতে গ্রন্থকারের ভারতীয় নাম যেভাবে এবং যত বিশেষণেই ভূষিত হোক না কেন, তিনি অবশ্যই আমাদের আলোচ্য মহান দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অতীশ।
অতীশ খুব সহজেই তিব্বতের সর্ব স্তরের মানুষকে আকর্ষণ করছিলেন। সেই সঙ্গে ‘বোধিপথপ্রদীপ’ও পরিবাহিত হতে থাকলো তাঁর শিষ্যদের মারফত। চতুর্দশ শতাব্দীতে সোংখাপা থেকে শুরু করে আজকের পরমপূজ্য দলাই লামা পর্যন্ত, ‘বোধিপথপ্রদীপ’-এর প্রচারের উত্তরাধিকার সুসংরক্ষিত; এখনো এই গ্রন্থপাঠ হয়ে চলেছে। অতীশের ‘বোধিপথপ্রদীপ’কে ভিত্তি করে, আচার্য সোংখাপা পরে ‘বিয়াং চুব লাম রিম চেনমো’ নামে একটি বহুখ্যাত গ্রন্থ রচনা করেন, যেখানে বোধিলাভের পথের পবিত্র ধাপগুলি ব্যাখ্যা করা আছে। তিব্বতি পন্ডিতদের লেখা ‘বোধিপথপ্রদীপ’-এর ২০টি ভাষ্য এখনো পাওয়া যায়। এই গ্রন্থের ভাষ্যরচনার ধারাটি একবিংশ শতাব্দী ছুঁয়ে বয়ে চলেছে। এক বার কয়েক জন তিব্বতি শিষ্য অতীশের কাছে এসে দর্শন-শিক্ষার প্রার্থনা জানালেন। অতীশ বললেন, ‘দার্শনিক ধারণা, সে তো অসীম, অনন্ত। তোমরা বরং সেই সারসত্যের (বংংবহপব) ধ্যান করো।’ শিষ্যরা বললো, কী ভাবে করবো? অতীশ উত্তর দিলেন, ‘ষড়রাজ্যের সমস্ত অনুভবী জীবের প্রতি করুণা রাখো। তাদের অসহনীয় দুঃখ দেখে যেনো তোমাদের বোধিচিত্ত জাগ্রত হয়। সমগ্র অন্তঃ ও বহির্ঘটনাকে মায়া বোধে ধ্যান করো। জগতের সমস্ত প্রাণের সঙ্গে একচিত্ত হয়ে সমস্ত কর্ম উৎসর্গ করো। এ ভাবেই সারসত্যে মন কেন্দ্রীভূত হবে।’ ‘বোধিপথপ্রদীপ’-এ অতীশ বুদ্ধের সমগ্র বাণীকে সংক্ষেপে ধরেছিলেন। তিব্বতে বৌদ্ধধর্মের শুদ্ধিকরণ ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অসামান্য।
পরমপূজ্য দলাই লামা ও বিশ্ব জুড়ে বহু বৌদ্ধ পন্ডিতের অসংখ্য রচনার মধ্য দিয়ে অতীশেরই উত্তরাধিকার চলেছে।তাঞ্জুরে সংরক্ষিত দীপঙ্করের রচনাবলীর মধ্যে যে গ্রন্থগুলির তিব্বতী তর্জমায় তিনি নিজে অংশ নিয়েছিলেন তার সংখ্যা ঊনআশিটি। তারমধ্যে কয়েকটি রচনার নাম হলো-১. অভিসময়-বিভঙ্গ, ২.অমৃতোদয়-নাম-বালবিধি,৩. অক্ষোভ্য-সাধন, ৪.অষ্টভয় ত্রাণ, ৫. আপত্তি-দেশনা-বিধি, ৬. আর্য-অচল-ক্রোধ-রাজ স্তোত্র, ৭. আর্য-অবলোকিত-লোকেশ্বর-সাধন, ৮. আর্য-গণপতি-রাগ-বজ সময় স্তোত্র, ৯. আর্য-তারা-স্তোত্র, ১০. আয়ুঃ -সাধন, ১১. এক-স্মৃতি-উপদেশ, ১২. কর-বিভঙ্গ, ১৩. কর্ম-আবরণ-বিশোধন-বিধি-ভাষ্য, ১৪. কায়বাক্-চিত্ত-সুপ্রতিষ্ঠা, ১৫. থসর্পন-অবলোকিত-সাধন, ১৬. গর্ভ-সংগ্রহ, ১৭. চর্যা-গীতি-বৃত্তি, ১৮. চর্যা সংগ্রহ-প্রদীপ, ১৯. চিতা-বিধি, ২০. চিত্তোত্পাদ-সম্বর-বিধি-ক্রম ২১. জল-বলি-বিমল-গ্রন্থ, ২২. তারা-ভট্টারিকা-সাধন, ২৩. দশ-অকুশল-কর্ম-পথ-(দেশনা), ২৪. দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান-ধর্ম-গীতিকা, ২৫. দেব-পূজা-ক্রম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews