1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :

দেশের অগ্রগতিতে নাগরিক সংগঠনগুলোর ভূমিকার প্রামাণ্য দলিল

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩
গত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রাষ্ট্র, বেসরকারি খাত ও অন্যান্য নাগরিক সংগঠনগুলো (সিএসও) নানা ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। তবে বাংলাদেশের উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতের অবদানের কথা বিভিন্ন নথিপত্রে স্থান পেলেও নাগরিক সংগঠনগুলোর অবদান ও ভূমিকার কথা তেমনভাবে নথিভুক্ত হয়নি এবং স্বীকৃতও নয়।
এই বাস্তবতায় বাংলাদেশে কর্মরত তিন শতাধিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, নাগরিক সংগঠন/প্ল্যাটফর্ম, নারী আন্দোলন, মানবাধিকার সংগঠন, সামাজিক উদ্যোক্তা এবং গবেষকদের ঐক্যজোট ‘সিএসও অ্যালায়েন্স’-এর পক্ষ থেকে সম্প্রতি ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর : আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনে নাগরিক সংগঠনের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম এমন একটি প্রতিবেদন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলো, যেখানে দেশের অগ্রযাত্রায় সহায়ক হিসেবে নাগরিক সংগঠনগুলোর অগ্রন্থিত ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে।
মঙ্গলবার, ১৯শে ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মহাখালীস্থ ব্র্যাক সেন্টারে একটি সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের নানাদিক তুলে ধরা হয়। এই প্রতিবেদনের সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন মূখ্য গবেষক ও সিপিডি-র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নাগরিক সংগঠনগুলোর বৃহৎ আকারে কাজের ধরন ও প্রায়োগিক দিকের ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদনে কয়েকটি বিষয়ের ওপর আলোকপত করা হয়েছে। যেমন : কৃষিখাতে উন্নয়ন ও খাদ্যনিরাপত্তা; ক্ষুদ্রঋণ অর্থায়ন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন; মানসম্মত শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন; স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা; জেন্ডার ও উন্নয়ন; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস; পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, পিছিয়ে পড়াদের মূলধারায় অন্তর্ভুক্তকরণ ও সামাজিক আন্দোলন।
সিএসও অ্যালায়েন্সের কনভেনর ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরী অনুষ্ঠানে বলেন, জাতির উন্নয়নের জটিল চিত্রপটে সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রচেষ্টা ও অগ্রগতির সঙ্গে জড়িত নাগরিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে আলোকপাত করার মাধ্যমে এই গবেষণায় বাংলাদেশের উন্নয়নের জটিল ও গতিময়তার চিত্রের গভীরে নিরীক্ষণধর্মী অন্বেষণ করা হয়েছে। বহুমুখী চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তাদের একনিষ্ঠতা ও নিরলস প্রচেষ্টা এ কথাই মনে করিয়ে দেয় যে, উন্নয়ন অভীক্ষা অর্জনের চেষ্টা একটি সম্মিলিত দায়িত্ব, যেখানে নাগরিক সমাজের সক্রিয় সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। গবেষণা গ্রন্থটি নতুন প্রজন্মকে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করবে বলে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন।
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই ১৯৬৯ সাল থেকে মহিলা সংগ্রাম পরিষদ নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ শুরু করে। এর পাশাপাশি নারী নির্যাতন বিরোধী আইন, যৌতুক বিরোধী আইনসহ নানা ক্ষেত্রে নারী সংগঠনগুলো ভূমিকা রেখেছে। এই প্রতিবেদনে সবার নাম আলাদাভাবে লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া যাঁরা নিজ উদ্যোগে, নিজেদের অর্থ-শ্রমের বিনিময়ে মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করেছেন, তাদের ভূমিকাও এ সময় স্মরণ করেন সুলতানা কামাল।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক আর্থ-সামাজিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এসব কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। তার মানে এই নয় যে, সেগুলো হয়নি। এত বছর পরে এসে সেসব বিষয় সংগ্রহ ও সংকলন করা বেশ জটিল কাজ। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে যে একটা সাংস্কৃতিক পরিবর্তন এসেছে, মানুষের উন্নয়ন থেকে শুরু করে নারীর ক্ষমতায়ন বা সমান অধিকারের ক্ষেত্রে যে উন্নতি হয়েছে—সেখানে নাগরিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা সবাই কমবেশি জানে। বিশেষ করে যারা গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তারা জানে। তারপরও এটি নথিভুক্ত থাকাটা জরুরি ছিল। সেদিক থেকে এটা একটা ভালো উদ্যোগ। এর পাশাপাশি আগামী ৫০ বছরে নাগরিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা কী হবে, সেই জায়গাতে একটা বোঝাপড়া থাকাটা খুব জরুরি বলে তিনি মত দেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু বলেন, সংবিধান অনুযায়ী একটি সমতাভিত্তিক, সম্প্রীতি ও মানবিক দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে মহিলা পরিষদ। তবে সমাজে এখনও অনেক বৈষম্য ও নারী-বিরোধী মনোভাব রয়েছে।
অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে একেকটা দশকে বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাজ করে গেছে নাগরিক সংগঠনগুলো। গত ৫০ বছরে তাদের ভূমিকা নথিবদ্ধ করার পাশাপাশি কবি সুফিয়া কামাল, স্যার ফজলে হাসান আবেদ, ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক সালিমুল হকের মতো ব্যক্তিত্বদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি নতুন প্রজন্মের সামনে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বদের তুলে ধরার তাগিদ দেন।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে নাগরিক সংগঠনগুলো।
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলেনে সিএসও অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ এবং ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অব হিউম্যানিটারিয়ান একর্টস ইন বাংলাদেশ (নাহাব)-এর উপদেষ্টা ড. এহসানুর রহমান বক্তব্য রাখেন। সিএসও অ্যালায়েন্স সেক্রেটারিয়েট-এর কো-অর্ডিনেটর ও ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেটিক্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইআইডি)-এর নির্বাহী প্রধান সাঈদ আহমেদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বিজয়ের এই মাসে দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে নাগরিক সংগঠনের ভূমিকা শীর্ষক এই সমীক্ষা প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে এবং পরবর্তী উন্নয়ন পরিকল্পনায় নীতি-নির্ধারণী মহলেও গৃহীত হবে বলে অনুষ্ঠানে বক্তারা আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews