মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী অস্থায়ী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব, ভাষা সংগ্রামী, টংক আন্দোলনের মহানায়ক, কমিউনিস্ট আন্দোলনের কিংবদন্তী, কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি প্রয়াত কমরেড মণি সিংহ এর ৩৩ তম মৃত্যু বার্ষিকীতে স্মরণ সভা অদ্য সন্ধ্যা ৭ ঘটিকায় সাতমাথাস্হ ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা কার্যালয়ে সিপিবি বগুড়া সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি বীর শাহনিয়াজ কবির খান পাপ্পুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতে প্রয়াত কমরেড মণি সিংহ এর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সাজেদুর রহমান ঝিলাম, কৃষক সমিতি বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ কুমার পাল, ক্ষেতমজুর সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লিয়াকত আলী কাক্কু, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বগুড়ার সভাপতি ফজলুর রহমান, যুব ইউনিয়ন বগুড়ার সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান পারভেজ, ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলার সভাপতি ছাব্বির আহম্মেদ রাজ প্রমূখ।
আলোচনা সভা সঞ্চালন করেন সিপিবি বগুড়া সদর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অখিল পাল।
আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, “প্রয়াত কমরেড মণি সিংহ আমৃত্যু গরীব মেহনতি মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে অগ্রদূত ছিলেন। কমরেড মণি সিংহ উপমহাদেশের ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন, স্বৈরাচারী পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের সংগ্রামসহ সারাজীবন শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীদের সংগঠিত করে গেরিলা বাহিনী গঠন করে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অসাধারণ অবদান রেখেছিলেন। তিনি সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য আমৃত্যু লড়াই করেছেন। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ত্যাগ ও সততার অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই বিপ্লবী নেতা যুগ যুগ ধরে তরুণ প্রজন্মের জন্য আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।”
বক্তারা আরো বলেন, “বর্তমানে কমরেড মণি সিংহ এর মত নীতিনিষ্ঠ, সৎ, দেশপ্রেমিক ত্যাগী নেতার খুবই প্রয়োজন। আজীবন ত্যাগের মধ্য দিয়ে কমরেড মণি সিংহ এ দেশে আদর্শিক রাজনীতির যে বীজ বপন করেছিলেন, তার ভিত্তিতে শোষণমুক্তির সংগ্রাম অগ্রসর করতে হবে। দেশের বর্তমান সংকট কাটাতে রাজনীতির আদর্শবাদী ধারাকে অগ্রসর করতে হবে। কমরেড মণি সিংহের আদর্শকে শক্তিশালী করা ছাড়া মানুষের মুক্তি ঘটবে না। কমরেড মণি সিংহের স্বপ্নের সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই তার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।”