1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩০ অপরাহ্ন

আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি : ডোনাল্ড লু

অদেখা বিশ্ব ডেস্ক
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৩ মে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের কিছু অংশ আলাদা করে পূর্বতিমুরের মতো একটি ‘খ্রিস্টান’ জাতি-রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে। তিনি আরো দাবি করেন, তিনি যদি বাংলাদেশে একটি বিমানঘাঁটি স্থাপনের জন্য একটি দেশকে অনুমতি দিতেন, তবে গত জানুয়ারিতে তাকে ঝামেলামুক্ত পুনর্নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করলেও, বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশীয় সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করেই এ বক্তব্য দিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘অফারটি এসেছে একজন সাদা মানুষের কাছ থেকে।… আমি যদি একটি নির্দিষ্ট দেশকে বাংলাদেশে একটি বিমানঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি দিতাম, তাহলে আমার কোনো সমস্যা হতো না।’

এই বিষয়টিসহ বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের আরো নানা বিষয়ে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। লিখিত সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়, যুক্তরাষ্ট্র কি কখনো বাংলাদেশে একটি বিমানঘাঁটি নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে?

জবাবে ডোনাল্ড লু লিখেছেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি।নির্বাচনের সময় আমাদের অগ্রাধিকার ছিল শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা।

গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সফর করেন লু। এ সফরে তিনি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্য প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্যবিষয়ক উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।

সফরে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সম্পর্কের মাঝে আস্থার জায়গা ফিরিয়ে আনা ও অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা পেছনে নয়, সামনের দিকে তাকাতে চাই।’

সেই সঙ্গে তিনি দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কমিটমেন্টের ব্যাপারটিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন।

ডোনাল্ড লুর সফরের পরপরই গত ২০ মে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ৭০৩১ (সি) ধারার অধীনে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে ‘পাবলিক ডেজিগনেশন’ (এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা) ঘোষণা করে।

ডোনাল্ড লু তার এবারের সফরে বাংলাদেশের সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, যারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করেছিল, তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা না করায় বিরোধী দল ও সুশীল সমাজের একাংশের সমালোচনার মুখে পড়েন। এসব বিষয়সহ যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক নীতিতে বাংলাদেশের ভূমিকা ও গুরুত্ব নিয়ে ডোনাল্ড লুর এই লিখিত সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

সাক্ষাৎকারে লু তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের অর্জন, দুর্নীতিবিরোধী লড়াই, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, জলবায়ু সংকট মোকাবেলা, নারী অধিকার ও উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কমিটমেন্টসহ অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দেন।

তিনি তার এবারের সফরে বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা না করা ও বাংলাদেশে নির্বাচন ইস্যুতে ও গণতন্ত্র ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিষয়ে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘নমনীয়’ নীতির সমালোচনার ব্যাপারেও তাঁর সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন।

প্রশ্ন করা হয়, আপনার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরে, আপনি বলেছেন যে বাংলাদেশে গত ৭ জানুয়ারিতে হয়ে যাওয়া সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হয় ও এ দেশে গণতান্ত্রিক ধারা উৎসাহিত হয়– এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কিছু উদ্যোগের কারণে দুই দেশের সম্পর্কে এক ধরনের টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়ে এখন আর পেছনের দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের মধ্যে আস্থার জায়গাটি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও কাজ করার কথা বলেছেন।

এটি কি বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের একটি ইঙ্গিত, যেখানে আপনারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনসহ গণতন্ত্র সুরক্ষা ও প্রসারের বদলে ভূরাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং কৌশলগত দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোতে বেশি মনোযোগ দিতে চান?

জবাবে ডোনাল্ড লু বলেন, আমার সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের সময় আমি যেমনটি বলেছিলাম, আমরা সামনের দিকে তাকিয়ে আছি, পেছনে নয়। আমরা বিস্তৃত পরিসরে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অংশীদারত্বকে এগিয়ে নিতে প্রস্তুত এবং আগ্রহী। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরো গভীর হবে। নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তায় আমরা আমাদের অভিন্ন স্বার্থকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা ইতিমধ্যে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করছি। আমরা অংশীদারত্বের ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে নিজেদের অভিন্ন অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

(সেই সঙ্গে) বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন আমাদের জন্য একটি অগ্রাধিকার। আমরা সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ কাজকে সমর্থন করে যাব এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখব।

নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্তকারী সহিংসতার নিন্দায় আমরা সোচ্চার ছিলাম এবং আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার ঘটনাগুলোর বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত করতে এবং যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্যও অনুরোধ করেছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে (সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে) আমাদের যোগাযোগ চালু থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews