ময়মনসিংহ অঞ্চলের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলায় লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বাড়ছে। অধিকাংশ গ্রামের কৃষক ও খামারির গরু এই রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে বিদেশি জাতের বাছুরের সংখ্যা বেশি। আক্রান্ত গরুকে সাধ্যমতো চিকিৎসা দিয়েও বাঁচানো যাচ্ছে না। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক ও খামারিরা।
গত তিন মাসে দেড় হাজারের বেশি গরু লাম্পি স্কিনে মারা গেছে বলে তথ্য দিয়েছেন গ্রাম্য পশু চিকিৎসকরা। দুই উপজেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারাও লাম্পি স্কিনে গরু মারা যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে কত সংখ্যক গরু মারা গেছে, এর সঠিক হিসাব দিতে পারেননি তারা।
দুটি উপজেলার পশু চিকিৎসক, গৃহস্থ ও খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর একই সময়ে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দেয়। তখন এ রোগ ব্যাপক হারে ছড়ায়নি। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে আবারও এ রোগে আক্রান্ত হতে থাকে গরু। এখন গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন। গ্রাম্য পশু চিকিৎসকরা প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। গৃহস্থ ও খামারিরা আক্রান্ত গরুকে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন।
গত তিন মাসে দুই উপজেলায় প্রায় ১৫০০ গরু মারা গেছে। এই ভাইরাস মশা-মাছির মাধ্যমে ছড়াচ্ছে। এই রোগ হওয়ার আগেই গরুকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। আক্রান্তের পর ভ্যাকসিন দিলে ভালো হতে অনেক সময় লাগে। তখন গরু খেতে না পারায় দুর্বল হয়ে মারা যায়।
হালুয়াঘাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তারেক রহমান জানান, প্রতিদিন লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত গরু ও বাছুর আসছে। এসব গরুর চিকিৎসার জন্য নিমপাতা ব্যবহার, খাবার সোডা আর জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। তা ছাড়া অনেকে আগেই অ্যান্টিবায়োটিক খাইয়ে নিয়ে আসে। এখানে আনলে অনেক গরু ভালো হচ্ছে। পাশাপাশি গরুর মালিকদের সচেতন করা হচ্ছে। এই রোগে আক্রান্ত গরু মারাও যাচ্ছে। কত সংখ্যক গরু উপজেলায় মারা গেছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সঠিক হিসাবটা এখন নেই।
ধোবাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাবিরানা শারমীম বলেন, গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। ভ্যাকসিন দেওয়া লাগে; আসলে কেউ ভ্যাকসিন দেয় না। তা ছাড়া সরকারি কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি। সঠিক কোনো চিকিৎসা নেই, তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। আক্রান্ত গরু ভালো হচ্ছে। গৃহস্থ ও খামারিদের সচেতন করা হচ্ছে। কত সংখ্যক গরু মারা গেছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সঠিক হিসাব করিনি।’
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট