ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরে টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়িরা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া অনেক পরিবারে দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।পানি বেধে জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতি। ভারী বর্ষনে পানিতে ডুবে গেছে শহরের রাস্তা-ঘাট, অলি-গলি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘর-বাড়িসহ নানা স্থাপনা।
কালীগঞ্জ শহরের হাট চাঁদনী ও কালীবাড়ির সামনে সড়কের তিন রাস্তার মোড়ে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমাট বেঁধে থাকে। ফলে সেখানে থাকা চা দোকানি,খাবার হোটেল, চালের আড়ত ফলের দোকান, রুটি ও ভাজা বিক্রেতাসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িদের ছোট বড় দোকান পানিবেধে তলিয়ে যাচ্ছে। এ পানি জমাট থাকার কারণে ব্যবসায়িদের দোকানে সাধারন ক্রেতারা সহজে আসতে পারছে না। ফলে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে তাদের বেচা বিক্রি। যার প্রভাব এই সকল ব্যবসায়িদের জীবন জিবিকার উপরে পড়ছে।
মূলত চিত্রা নদীর উপর নবনির্মিত ব্রিজের সাথে সড়কের সংযোগ স্থাপনে নতুন করে সড়কটি বেশ খানিকটা উঁচু করা হয়েছে। যে কারণে সামান্য বৃষ্টি হলে পানি কালিবাড়ির সামনে হাট চাঁদনীর তেমাথায় নিচু থাকার কারণে জমাট হয়ে থাকে। জমাট হওয়া পানি বেরিয়ে যাবার কোন সুব্যবস্থা না থাকায় সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘকালীন জলবদ্ধতা। বৃষ্টি বেশি হলে পানি পাশের কাপুড়িয়া পট্টির গলিতে ঢুকে পড়ে। নতুন ব্রিজের সাথে তৈরিকৃত রাস্তার ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা এবং তিন রাস্তার মোড়ে কাপুড়িয়া পট্টিতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলেও নিচু অংশের সাথে ড্রেনেজ এর কোন সংযোগ না থাকায় পানি অপসারণ হয় না।ফলে ব্যবসায়িরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
সরোজমিনে দেখা যায়, হাট চাঁদনীর সামনে তিন রাস্তার মোড়ে দোকানগুলো পানিতে তলিয়ে রয়েছে। দোকানিদের দোকান খুলে বসে থাকতে দেখা গেলও আগের মতো ক্রেতার দেখা মিলছে না। এ সময় একজন দোকানি উপায় না পেয়ে দোকানের সামনে জমে থাকা পানি নিজে বালতি দিয়ে অপসারণ করছে। সেখানকার ব্যবসায়ি ফল বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম ও রুটি বিক্রেতা শাহিনুর রহমান জানান, ব্রিজের রাস্তা অনেকটা উঁচু হওয়ার কারণে বৃষ্টি হলেই সব পানি গড়িয়ে এসে দোকানের সামনে জমাট হয়ে থাকে। পানিতে দোকান তলিয়ে থাকাই সাধারন ক্রেতারা আসতে পারে না। যে কারণে বৃষ্টির দিন এবং তার পরে কয়েকদিন দিন বেচা বিক্রি অনেক কমে যায়। ফলে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি, যার প্রভাব পড়ছে আমাদের রুটি রুজিতে।এলাকার বেশ কিছু আড়তে বৃষ্টিতে দোকানের মধ্যে পানি ঢুকে যায় ফলে অনেকের মালামালের ক্ষতিসাধন হয়। এ পানি চিত্রা নদীতে প্রবেশ করতে পারে না, যে কারণে বেচা-কেনা নেই বললেই চলে। জলাবদ্ধতার কারণে পণ্য আনা-নেওয়া করতেও মারাত্নক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে দায়ত্বশীলদের নিকট বলে কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। হাট চাঁদনীর সামনে ভুক্তভোগী ব্যবসায়িদের দাবি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে বৃষ্টির পানি অপসারণ এর স্থায়ী সমাধান করা হোক। এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ পৌর ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান বলেন, বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে ব্যবসায়িদের চরম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আমি সেখানকার ব্যবসায়িদের খোজখবর নিয়েছি। কালীগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্বশীলদের সাথে আলাপ করে দ্রুত সমাধানের জন্য কথা বলবো। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবসায়িদের এই সমস্যা নিরসন হবে।পানি জমে সড়কটি চলাচলের একবারে অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। কিন্তু পৌরসভার আওতাধীন সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন এ সড়কে চলাচলকারী ব্যবসায়ি, ক্রেতাগন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্ধীরা। অনেক শিক্ষার্থীরা হাঁটতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে তাদের স্কুল ড্রেসে কাদা ও নোংরা পানি লেগে যায়। বাধ্য হয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা কেউ কাদা জামা নিয়েই স্কুলে আসে, আবার কেউ বাসায় গিয়ে ড্রেস পরিবর্তন করে স্কুলে যায়।