ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ও সমাপনীতেই দেখা মেলে তাদের। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে নিজের ফেডারেশন নিয়ে নতুন নতুন স্বপ্ন দেখিয়ে আসছিলেন রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ পাওয়া সভাপতিরা। ফেডারেশনকে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করা সেসব সভাপতি সরকার পতনের পর এখন লাপাত্তা। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় তাদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে, আবার কেউ আছেন আত্মগোপনে।
ক্রিকেট-ফুটবল ছাড়া গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্রীড়াঙ্গনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তাই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিদ্যমান ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন, বোর্ড ও সংস্থাগুলোর কার্যক্রম নিয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিতে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সেই কমিটির সুপারিশে কয়েক দিন আগে একযোগে দেশের ৪২টি ফেডারেশনের সভাপতিকে অপসারণ করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সভাপতির শূন্যস্থান পূরণে কাজও শুরু করেছে এই কমিটি।
ফেডারেশনগুলো যাতে রাজনৈতিক বলয় থেকে মুক্তি পায়, সে জন্য ক্রীড়াবান্ধব সংগঠকদের সভাপতির চেয়ারে বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বলে গতকাল সমকালকে জানান সার্চ কমিটির অন্যতম সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক এম এম কায়সার, ‘যাদের স্পোর্টসের প্রতি ভালোবাসা আছে, খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে, তাদেরই আমরা অগ্রাধিকার বেশি দেব। হতে পারে সাবেক সংগঠক, হতে পারে ব্যবসায়িক কিংবা সাবেক খেলোয়াড়। পূর্ণমাত্রায় রাজনীতিতে জড়িত থাকলে এমন কোনো ব্যক্তিকে ফেডারেশনে আসাটা আমরা নিরুৎসাহিত করব। কারণটা হলো তারা শুধু উদ্বোধন ও সমাপনী অনুষ্ঠানে থাকেন; কিন্তু কার্যকরী কোনো কাজ তাদের দিয়ে হয় না। আমি মনে করি, ফেডারেশনের সভাপতি হতে হবে অরাজনৈতিক।’
সভাপতি নিয়োগ দেওয়ার এখতিয়ার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের। সার্চ কমিটি যোগ্য ও কার্যকর ক্রীড়াবান্ধব ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে সেই নামগুলো দেবে মন্ত্রণালয়ে। একটা ফেডারেশনের জন্য সভাপতি পদে একাধিক ব্যক্তির নাম থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন সার্চ কমিটির সদস্য এম এম কায়সার। একটা ফেডারেশনের মূল চালিকাশক্তি হলেন সাধারণ সম্পাদক। সভাপতির মতো এই পদেও আছেন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তি। তাদের এখনই অপসারণ করতে চাইছে না মন্ত্রণালয়। বরং নতুন নিয়োগ পাওয়া সভাপতির ওপর বিষয়টিই ছেড়ে দিতে চায় সার্চ কমিটি।
‘যিনি সভাপতি হবেন, তিনি বর্তমান কমিটির সঙ্গে কাজ করবেন, নাকি নতুন করে কমিটি গঠন করবেন, সেই পরিকল্পনা আমরা তাঁর কাছ থেকে নেব। আমরা তাঁকে কিছু পরামর্শ দেব। এই ব্যক্তি লম্বা সময় অর্থাৎ ২০-৩০ বছর ধরে এই ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। আপনি তাঁকে যোগ্য মনে করছেন কিনা বা আপনি তাঁর সঙ্গে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন কিনা। তবে আপনি যদি আমার মতামত জানতে চান, তাহলে আমি বলব ফেডারেশনগুলোতে কাজ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নতুন মুখের প্রয়োজন আছে।’
নতুন মুখ খুঁজে বের করতে হলে সভাপতি পদে নির্বাচনটাও জরুরি। সে জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের গঠনতন্ত্রও পরিবর্তন করা হতে পারে বলে জানান এম এম কায়সার, ‘আমরা যে কাজের প্রক্রিয়া ঠিক করেছি, সেখানে নির্বাচন ও গঠনতন্ত্রের বিষয়টি আরেকটু পরে। সেটা পঞ্চম বা ষষ্ঠ ধাপের মধ্যে আছে। গঠনতন্ত্রে যদি কোনো ভুল থাকে, সেটা আলোচনা করে ঠিক করার চেষ্টা করব। নির্বাচনের গঠনতন্ত্রের মধ্যে পরিবর্তন বা সংস্কার আনার চেষ্টা করব।’
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট