1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৪ অপরাহ্ন

কথায় গানে মাজারে হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদ

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ইউরোপ-আমেরিকায় মাজার নেই, বিপরীতে আমাদের দেশে অগণন মাজার। এর কারণ পাশ্চাত্যে আধ্যাত্মিক জ্ঞানতৃষ্ণা মেটাতে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে, যেটি আমাদের দেশে নেই। আমাদের দেশের মানুষের মনের তৃষ্ণা ও আধ্যাত্মিক জিজ্ঞাসার উত্তর দিয়ে গেছেন ওলি-আউলিয়া ও ফকিররা। তাঁদের প্রয়াণের পর তাঁদের মাজারগুলো মানুষের মনের তৃষ্ণা মেটানোর উত্তম ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।এসব মাজার বাংলার ভাবচর্চার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এসব মাজার জ্ঞানচর্চার জীবন্ত একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া কখনো মানুষের ওপর জুলুম করে না। সম্প্রতি দেশে মাজারে মাজারে হামলার প্রতিবাদে ভাববৈঠকির আয়োজনে গতকাল রবিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয় ফকিরি গান ও ভাব আলোচনা।এতে বাংলার আশেকানি ও ভাবের ধারার গান পরিবেশন করেন দেশবরেণ্য শিল্পী ও পালাকাররা। ভাব আলোচনা করেন কবি ও ভাবুক ফরহাদ মজহার। গতকাল সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘মাজার ভাঙার সঙ্গে ইসলাম ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। ধর্মকে এখানে টানা হয় মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য।আয়োজনের শুরুতে ভাববৈঠকির পক্ষে উপস্থাপক মোহাম্মদ রোমেল বলেন, “মাজারে আগেও হামলা হয়েছে। কিন্তু এবার যেভাবে একটার পর একটা মাজারে হামলা হয়েছে, সেভাবে হয়নি। এটি নজিরবিহীন। বাংলায় ইসলামের বিস্তারে এ দেশের ওলি-আউলিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাঁদের সমাধীই এ দেশের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার ‘মাজার’।এই মাজার দেশের গণসংস্কৃতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।”

অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী গান পরিবেশন করেন ফরিদপুরের বিখ্যাত ফকির আবুল সরকার। তিনি গেয়ে শোনান লালন সাঁইয়ের ভাববাণী ‘এলাহি আলামিন আল্লাহ বাদশা আলম পানা তুমি’। এ সময় শহীদ মিনারের উন্মুক্ত মজলিস তাঁর সঙ্গে গলা মেলায়। পরিবেশনের আগে যারা মাজার ভেঙেছে তারাই আবার মাজার গড়ে দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অনুষ্ঠানের একমাত্র ভাব আলোচক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাবচর্চার ইতিহাসে যাঁরা অত্যন্ত সামনের মানুষ, আল্লাহ ও রাসুলের প্রেম-মহব্বত বিস্তারে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা হলেন এ দেশের বাউল ফকির। তাঁরা সবাই আজ এই আয়োজনে যুক্ত হয়েছেন।’

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদের চেয়েও বেশি যে কারণে এখানে এসেছি তা হলো প্রার্থনা জানাতে, এলাহি আলামিন যেন তাদের মনে রহম দেন। তাদের সুপথে ফিরিয়ে আনেন। আমাদের কাজ বিচার করা নয়, আমাদের কাজ প্রতিবাদ ও প্রার্থনা করা।’

তিনি বলেন, ‘আল্লাহর নামে, ধর্মের নামে যারা জুলুম করছ, তোমরা সেই ওলি-আউলিয়ার সমান হতে পারবে না। জালিম চিরজীবন জালিম থাকে। আমি চিরদিন মজলুমের পক্ষে। আমাকে মাজারের পক্ষের লোক বলে রোখা যাবে না। আপনারা পরকাল নিয়ে ব্যবসা করেন। পরকাল নিয়ে আমরা ব্যবসা করি না।‌ আমরা ইহকালেই রাসুলকে চাই।’

মাজার ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার আশ্রয়স্থল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিজাম উদ্দিন আউলিয়া ডাকাত ছিলেন। তাই আমরা তোমাদের মতো ডাকাতদেরও ঘৃণা করি না। তোমাদের হেদায়েত লাভ হোক। মাজার ভেঙে থামিয়ে দিতে পারবে না।’

অনুষ্ঠানে গান শোনান আলেয়া বেগম, সুনীল কর্মকার, ফকির আবুল সরকার, ছোট আবুল সরকার, শাহ আলম সরকার, মুক্তা সরকার, ইমন তালুকদার, আশরাফ উদাস, রাজ্জাক পরবাসী, জনি বাউল, কোহিনূর আক্তার গোলাপি, আরিফ বাউল, সুধাম আনন্দ, সমীর বাউল, মানিক দেওয়ানসহ আরো অনেকে।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে মাজার ভাঙার মতো ফৌজদারি অপরাধ করে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে দেশবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধের আহবান জানাতে এই অনুষ্ঠান। পাশাপাশি এ ধরনের আসরের মধ্য দিয়ে দেশের গণসংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা ও বোঝাপড়া আরো পরিষ্কার হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews