রাজধানীর কাকরাইলে আজ শনিবার সব ধরনের জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শুক্রবার ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ২৯ ধারা অনুযায়ী এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ডিএমপি।
ডিএমপি নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, যেকোনো মূল্যে শনিবার কাকরাইলে পূর্বঘোষিত সমাবেশ করব। জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আগের (আওয়ামী লীগ) সরকারের কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডে আমরা জড়িত ছিলাম না।
এ ঘোষণার পর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ স্থগিত করে জাতীয় পার্টি (জাপা)। শুক্রবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন জাপা চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী। এতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল চত্বরে অনুষ্ঠেয় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ২৯ ধারার ক্ষমতা বলে (সভাস্থল) পাইওনিয়ার রোডস্থ ৬৬ নম্বর ভবন, কাকরাইলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে কোনো প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করায় জাতীয় পার্টি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী সময়ে কর্মসূচি জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, ফ্যাসিবাদের সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা ও ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখার অভিযোগে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টিকে সমাবেশ করতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেছেন, আওয়ামীলীগের দোসর জাতীয় পার্টিকে শনিবার সমাবেশ করতে দেওয়া মানে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার আরেকটি চক্রান্ত। এ কারণে জাতীয় পার্টিকে আগামীকাল সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।’এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতা’ ব্যানারে একদল লোক একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যায়। এ সময় সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে আগুন দেওয়া হয়। দুই পক্ষই দাবি করেছে, তাদের ওপর আগে হামলা হয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মশাল মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। সেই মিছিলটি শাহবাগ হয়ে বিজয়নগরে যায়। সন্ধ্যা ছয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অপতৎপরতা ও দেশবিরোধী চক্রান্তের’ প্রতিবাদে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতা’র ব্যানারে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল বের করেন। জাতীয় পার্টির কার্যালয় ঘেরাও করতে বিজয়নগরে যায় মিছিলকারীরা। সেখানে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সাথে আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি অবস্থানের ফলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট