স্কুল ভবনের দেয়াল ও সীমানা প্রাচীর জুড়ে ছেয়ে থাকা কয়েক’শ ক্যানভাসে রকমারি রঙরেখায় ফুটে উঠেছে আবহমান গ্রাম-বাঙলার প্রকৃতিসহ গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি। এসব নিসর্গ-চিত্র ছাড়াও চিত্রপট জুড়ে জলজল করছে বিভিন্ন রঙের মিশেলে শিশু আঁকিয়েদের কোমল হাতের পরশে চিত্রিত ‘আল্লাহু’, ‘ওম’সহ আরবি ও সংস্কৃত ভাষার বিভিন্ন শব্দ-বর্ণ। কেউ কাঠের রঙ পেন্সিল, কেউবা মোমরঙ ও অনেকে আবার জলরঙের ব্যবহারে তুলির আঁচড়ে ক্যালিগ্রফি, থ্রিডি আর্ট ও টেকনিক্যাল ড্রয়িং করেছে। এমন দৃশ্য যশোর শহরের লালদিঘি পাড়ে ব্রাদার টিটোস হোম স্কুল আঙিনার।
সোমবার ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে অফ ইসলামিক আর্ট’ উদ্যাপন উপলক্ষে স্কুলটিতে অনুষ্ঠিত হয় বিটিএইচ আর্ট এক্সিবিশন-২০২৪। এক্সিবিশনটিতে প্রদর্শনের জন্য নার্সারি, কেজি, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী নিজেদের আঁকা চারটি করে ছবি জমা দেয়।
এদিন দুপুর গড়াতেই স্কুলটির আঙিনা কচিকাঁচাদের কলতানে মুখর হয়ে ওঠে। হেমন্ত দুপুর যতই ঢলে পড়তে থাকেই ততই বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের সংখ্যা। অগ্রহায়ণের মিষ্টি শীতের বিকেলে ক্যানভাস জুড়ে শিশুদের আঁকা গ্রামীণ জীবনের ছবি মুগ্ধতাভরে ঘুরে ঘুরে দেখেন অতিথিরা।
এক্সিবিশনে রাখা ছবিতে দেখা গেছে, কাঁধে বাক (বহনের কাজে বাঁশের তৈরি উপকরণ) ঝুলিয়ে তাতে রসের হাড়ি বয়ে নিয়ে চলেছেন লাল জামা ও চেক লুঙ্গি পড়া একজন মানুষ। পাশে ছনের চালের দোচালা ঘর। তার পাশে খেজুর গাছ। অনতি দূরে বটবৃক্ষ। ভোরে নদীর বুক থেকে লাল সূর্যের উঁকি; বৈঠা বেয়ে নৌকা চালিয়ে যাওয়া মাঝিসহ গ্রাম জীবনের এমন কোনো দৃশ্য নেই যা ঠাঁই পাইনি যেন।
এক্সিবিশন চলাকালে সংক্ষিপ্ত পরিসরের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি যশোর ক্যান্টনমেন্ট হাইস্কুলের সাবেক শিক্ষক মমতাজ উদ্দিন। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে বিশেষ পুরস্কার তুলে দেন তিনি।
স্কুলটির অধ্যক্ষ আলী আজম টিটো জানান, এখানকার শিক্ষার্থীদের চার ধরনের ছবি আঁকা শেখানো হয়। জেনারেল ড্রয়িং ছাড়াও শেখানো হয় আরবি, বাঙলা, সংস্কৃতি ও ইংরেজি ক্যালিগ্রাফি, থ্রিডি আর্ট এবং টেকনিক্যাল ড্রয়িং। এ ছাড়া চর্চা করানো হয় বিউটিফুল হ্যান্ড রাইটিং উইথ ইলাসট্রেশন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট