কমিউনিটি মোবিলাইজেশনের লিঙ্কেজ এর মাধ্যমে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ইন্টোরিওর ডিজাইন ও ফ্যাশন ডিজাইনে প্রশিক্ষণ পেয়ে তিনবোন এখন স্বাবলম্বী ও উদ্যোক্তা । বাবলি ডিমলা উপজেলার টিএনটি পিভিসির প্রকল্পের একজন নিঃস্ব ও অতি দরিদ্র সদস্য । বাবলির স্বামীর নাম বাবলু। বাবলু ডিমলা বাজারে সাইকেল এর মেকানিক এর কাজ করেন। তা দিয়ে যা পান, এতেই কোনমতে দিন চলে যায়। বাবলির পরিবারে শ্বশ্বর শাশুড়ী ও চার মেয়েসহ পরিবারের সদস্য সংখ্যা আট(৮) জন। পরিবারের চার (৪) মেয়েই পড়াশোনা করেন। বড় মেয়ে স্নিগ্ধা (২৪) এবার অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছেন। তিথি ও প্রীতি (২১) দুই যমজ বোন। দু’জনে নীলফামারী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ছোট মেয়ে প্রিতমা (১০) এবার চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। চার (৪) মেয়ের পড়াশোনার খরচ এবং সংসার খরচ চালানো বাবলুর জন্য অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়ে। বাবলি টিএনটি পাড়া পিভিসির সদস্য। সংসারে অভাব থাকলেও সে নিয়মিত পিভিসি সেশনে অংশ্রগহণ করেন। প্রকল্পের কর্মকর্তাদের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন। পিভিসি মিটিং বাবলী তার মেয়েদের পড়াশোনার পাশাপাশি কোন প্রশিক্ষণে যুক্ত করা যায় কিনা সেই ব্যাপারে প্রকল্পের কমিউনিটি মোবিলাইজেশন কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেন।
প্রকল্প থেকে উদ্যোগ নিয়ে কমিউনিটি মোবিলাইশেন কম্পোনেন্ট এর আওতায় বাবলীর তিন মেয়েকে ( স্নিগ্ধা, তিথি ও প্রীতিকে ধারাবাহিকভাবে দুই ব্যাচের মাধ্যমে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করিয়ে ইন্টোরিওর ডিজাইন ও ফ্যাশন ডিজাইনের ওপরে তিন মাসের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তিথি ও প্রীতি এখন ঘরে বসেই ফ্যাশন ডিজাইন ও ইন্টোরিওর ডিজাইনের কাজগুলো করছেন। সেই সাথে স্নিগ্ধাও তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে। তাঁদের তিথি ও প্রীতির নামে দুইটি ফেসবুক পেজও রয়েছে। যেখান থেকে তারা নিয়মিত বিভিন্ন ডিজাইনের পণ্যের অর্ডার পান। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা শহরের যেকোন মেলা ও উৎসবে ইন্টোরিওর ডিজাইন ও ফ্যাশন ডিজাইনের স্টল দেন। সেখান থেকেও ভাল বেচাকেনা হয়। তিথি ও প্রীতি প্রতি মাসে তারা ৬০০০-৮০০০ টাকার মতো আয় করেন। যা দিয়ে। তিথি ও প্রীতির পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি বাবা-মাকেও সহযোগিতা করেন। তিথি ও প্রীতি ছাড়াও শার্প পিপিইপিপি-ইইউ প্রকল্পের আওতায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সাথে ফ্যাশন ডিজাইনে ৭ জন এবং ইন্টোরিওর ডিজাইনে ৪ জনকে যুক্ত করা হয়েছে। প্রীতি ও তিথির স্বপ্ন, একদিন তারা বড় উদ্যোক্তা হবে, ইন্টোরিওর ডিজাইনের ওপরে তাঁরা দু’বোন মিলে একটি কোম্পানি খুলবেন। সেখানে শত শত ছেলে-মেয়ের কর্মসংস্থান হবে। তাঁদের এই লড়াই বেকারত্বের বিরুদ্ধে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট