গত বছর ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীর নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘মামলা বাণিজ্য শুরু হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যার বিচারের দাবিতে ব্যবসা শুরু হয়েছে আমাদের সমাজে।তাদের আমরা চিহ্নিত করব। অবশ্যই তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
আসিফ নজরুল আরো বলেন, ‘সাধারণ আদালতে মামলা নিয়ে অনেক অসংগতি হচ্ছে। মামলা নিয়ে ব্যবসা করছে।কোনো কোনো স্বার্থান্বেষী মহল ভুল মামলা দিচ্ছে। প্রকৃত অভিযুক্তের পাশাপাশি অনেক লোককে আসামি করে মামলা হালকা করার চেষ্টা করছে। এটা আমরা কিভাবে সমাধান করব?’
পুলিশ সদর দপ্তরে গত বছর ৫ ডিসেম্বরের এক অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, মামলায় নাম থাকলেই গণহারে গ্রেপ্তার করা যাবে না। পাইকারি হারে কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে না।নিরীহ কাউকে হয়রানি করা যাবে না। ইচ্ছাকৃত মিথ্যা মামলা করলে বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছর ৮ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় মামলা নিয়ে বাণিজ্য হচ্ছে। ওই সব মামলায় আসামি হলেই গ্রেপ্তার কিংবা বাসায় বাসায় গিয়ে হয়রানি করা যাবে না। তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলেই কেবল আইনের আওতায় আনা যাবে।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা হবে। মামলা অপকর্মে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছর ১৬ নভেম্বর রংপুরে জুলাই অভ্যুত্থানের পর মামলা বাণিজ্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, ‘মামলা বাণিজ্য শুধু রংপুরে নয়, সারা বাংলাদেশে চলছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে কঠোরভাবে বলতে চাই, আমার শহীদ ও আহত ভাইদের নিয়ে মামলা বাণিজ্য চলবে না। মামলায় টাকা দিয়ে নাম দিচ্ছে, টাকা নিয়ে নাম কাটাচ্ছে, এই ব্যবসা থেকে সামগ্রিকভাবে সবাইকে বের হতে হবে।’
এর আগে গত বছর ১৪ অক্টোবর মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়েরকারী ও অপতৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সবার অবগতির জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলিংসহ নানা রকম হয়রানি করার উদ্দেশে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক মামলা দায়ের বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধ। এসব কর্মকাণ্ডে জড়িতদের কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি প্রদানসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে এরই মধ্যে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।’
সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এসব অপতৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’-এ অভিযোগ/তথ্য জানানোর জন্য এবং সব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।