একজন সুস্থ মানুষের শীত মৌসুমে আড়াই লিটার পর্যন্ত পানি পান করা উচিত। তবে কোনোভাবেই দুই লিটারের কম হওয়া চলবে না। একজন পূর্ণ বয়সী সুস্থ মানুষের দিনে তিন লিটার পানি পান করা দরকার। সাড়ে তিন লিটারেও সমস্যা নেই, তবে এর বেশি পানি পান করা অনুচিত।এখন ঠাণ্ডা আবহাওয়া। এ সময় শরীরে ঘাম হয় না বললেই চলে। তবে শীতে তৃষ্ণা কম লাগে বলে অনেকেই পানি কম খান। এ বিষয়ে জানাচ্ছেন গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান।
শিশুদের ক্ষেত্রে
পাঁচ থেকে ৯ বছর বয়সীদের পান করতে হবে দুই লিটার পানি। কেউ চাইলে আড়াই লিটার পর্যন্ত পান করতে পারে।
দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে মায়ের বুকের দুধ পান করে, তাহলে আলাদা করে বাড়তি পানিপানের প্রয়োজন নেই।
তবে দুই বছরের অধিক বয়সী শিশুদের এক থেকে দেড় লিটার পানি পান করাতে হবে।তবে দৌড়াঝাঁপ করা চঞ্চল শিশুদের সর্বোচ্চ পৌনে দুই লিটার পর্যন্ত পানি পান করালেও ক্ষতি নেই।
পানির বিকল্প
পানির পরিবর্তে ঘরে বানানো পানীয়, ফলের রস, শরবত দেওয়া যেতে পারে শিশুদের। বাইরে থেকে কেনা কোমল পানীয়, এনার্জি ড্রিংক, ইলেকট্রোলাইট ড্রিংক পান করানো থেকে বিরত থাকতে হবে। পানি যাদের কম পছন্দ তারা ডাবের পানি পান করতে পারেন। এটি পানির পরিপূরক।
শারীরিক সমস্যা
কিডনি রোগীদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পানি ও পানীয় গ্রহণ করতে হবে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তাদের পানি কম বা বেশি পানের সম্পর্ক নেই। শাক-সবজি, ফলমূল বেশি খাওয়া ও লাল মাংস কম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমতে পারে। এমন রোগে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি পান করে ফেললে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গরম, অস্থিরতা, মানসিক চাপ, হরমোনের অসামঞ্জস্যতার কারণে কাউকে কাউকে অতিরিক্ত ঘামতে দেখা যায়। এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে স্বাভাবিক মাত্রায় পানি পান চালিয়ে যেতে হবে। জ্বর হলে ঘন ঘন পানি, ফলের রস, স্যুপ খেয়ে পানির ঘাটতি পূরণ করতে হবে। ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ পানি না খেয়ে কিছুক্ষণ পর পর একটু একটু করে ওরস্যালাইন পান করতে হবে।
পানিপানের নিয়ম
এক চুমুকে এক গ্লাস বা এক বোতল পানি পান করে ফেলা উচিত নয়। দম নিয়ে নিয়ে অল্প অল্প করে পান করা উচিত। দীর্ঘ সময়ের বিরতিতে অনেকটা পানি একবারে গ্রহণ করে পানির ঘাটতি পূরণ করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির এক-দেড় ঘণ্টা পর পর স্বাভাবিক গ্লাসের এক গ্লাস করে পানি পান করা উচিত। বড় মগে করে একবারে অনেকটা পানি না খাওয়াই ভালো।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট