মুস্তফা জামান আব্বাসী একজন সঙ্গীতজ্ঞ, শিল্পী, সংগ্রাহক,গবেষক, লেখক। এছাড়া তিনি টেলিভিশন উপস্থাপনা করেও বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি অবিভক্ত ভারতের কুচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বাংলা পল্লীগীতির বিশিষ্ট শিল্পী আব্বাস উদ্দিন আহমেদ।বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল তাঁর বড়ভাই এবং ফেরদৌসী রহমান তাঁর ছোটবোন। আজকে চলে গেলেন মুস্তফা জামান আব্বাসী। তিনি ৮৯ বছর বয়সে ঢাকার একটি হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু বরণ করেন।
মুস্তফা জামান আব্বাসী তাঁর শৈশবে বিশিষ্ট ওস্তাদ মুহম্মদ হোসেন খসরু ও গুল মোহাম্মদ খানের কাছে উচ্চাঙ্গসংগীতে শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ.(অনার্স) এম.এ.ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি লালন ফকির ছাড়াও বিভিন্ন সুফি সঙ্গীতের বিষয়ে গবেষণা করেন এবং অনেক সুফি শিল্পীর গান সংগ্রহ করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের “বাঁশরী”,” হিজল তমাল” ও “ভরা নদীর বাঁকে ” তাঁর উপস্থাপিত বিশেষ পল্লীগানের অনুষ্ঠান,যা আমাদেরকে পল্লীগানের প্রতি আকৃষ্ট করে।
তিনি ইউনেস্কোর অধীনে ১১ বছর বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিটি অব মিউজিকের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি অনেক দেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।তিনি ৫০ টির বেশি বইয়ের রচয়িতা। এরমধ্যে ভাওয়াইয়ার জন্মভূমি, ভাটির দেশের ভাটিয়ালি, পুড়িব একাকী, রুমির অলৌকিক বাগান,মুহম্মহের নামভউল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পুরস্কার একুশে পদক সহ লালন একাডেমি, নজরুল একাডেমি, বাংলা একাডেমি সহ অনেক পুরস্কারে ভূষিত হন।
তাঁর স্ত্রী আসমা আব্বাসী একজন শিক্ষাবিদ ও লেখক। দুই মেয়ে সামিরা আব্বাসী ও শারমিনী আব্বাসী। সামিরা আব্বাসী নজরুল সঙ্গীত ও লোকসঙ্গীত শিল্পী। বাংলাদেশের সঙ্গীত ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। তিনি বাংলাদেশের শুধু নন, সারাবিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য বড়ো অনুপ্রেরণা হিসেবে বাঙালি মনে সদা জাগরুক থকবেন।