বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী টাউনক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগকে কেন্দ্র করে গুরুতর আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। কলেজের গভর্নিং বডির দুই সদস্য পিয়ার হোসেন পিয়ার ও জাহিদুর রহমান টুলু গত ৭ মে জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে বিষয়টি জানান।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই একাধিক অনিয়ম ও স্বচ্ছতার অভাব দেখা গেছে। দৈনিক যুগান্তর ও করতোয়া পত্রিকায় গত ১০ মার্চ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পর গত ৩ মে কলেজে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগকারীরা জানান, নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর পরীক্ষা শুরু হওয়ায় পুরো প্রক্রিয়াটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এমনকি পরীক্ষার দিন কর্তব্যরত সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাদেরকেও বাধা দেওয়া হয়, যা সুশাসনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
লিখিত অভিযোগে গভর্নিং বডির এই দুই সদস্য আরও দাবি করেন যে, কলেজের সভাপতি কেএম মাহবুবার রহমান হারেজ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সিরাজগঞ্জের এক প্রার্থীকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। অভিযুক্ত প্রার্থী জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে তার বর্তমান কর্মস্থলেও অর্থ তছরুপ এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারী পিয়ার হোসেন পিয়ার ও জাহিদুর রহমান টুলু বলেন, “এই ঐতিহ্যবাহী কলেজটি নারী শিক্ষায় শেরপুরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এখানে নিয়োগে কোনো প্রকার অনিয়ম ঘটলে তা শুধু এই প্রতিষ্ঠানের নয়, বরং গোটা শিক্ষাব্যবস্থার ওপর একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমরা অবিলম্বে বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অপসারণ করে নতুন করে একটি স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর জোর দাবি জানাচ্ছি।”
তবে, কলেজের সভাপতি কেএম মাহবুবার রহমান এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান তাঁদের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাঁরা জানান, নিয়োগ বোর্ড সম্পূর্ণ নিয়ম মেনেই পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে এবং আর্থিক লেনদেনের অভিযোগটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এ বিষয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি ফয়সাল মাহমুদের কাছে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো প্রকার বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এদিকে, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী মহল এবং কলেজের অভিভাবকরা এই গুরুতর অভিযোগের একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট