1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৬:০১ অপরাহ্ন

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা একজোট শীর্ষক মতিবিনিময় সভা

স্টাফ রিপোর্টার:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫
‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা একজোট’ শীর্ষক জাতীয় মতবিনিময় সভায় অতিথি ও আয়োজকেরা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন করপোরেশন মিলনায়তনে।

২২ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, বিকেল ৩:০০টায় বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন অডিটোরিয়াম, পর্যটন ভবন (পশ্চিম আগারগাঁও, শেরে বাংলা নগর) ঢাকায়- “Her Dignity, Her Rights: Unite for Stopping Violence against Women and Children” “নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা একজোট” শীর্ষক জাতীয় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গণসাক্ষরতা অভিযানসহ আরো ৮টি সহযোগী সংগঠন (CAMPE), ব্র্যাক (BRAC), এডুকো (EDUCO), এমজেএফ (MJF), নেটজ বাংলাদেশ (NETZ Bangladesh), অক্সফাম ইন বাংলাদেশ (Oxfam in Bangladesh), প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (Plan International Bangladesh), সেভ দ্য চিলড্রেন-বাংলাদেশ (Save the Children-Bangladesh) এবং সাইটসেভার্স বাংলাদেশ (Sightsavers Bangladesh)-এর যৌথভাবে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। যার মূল উদ্দেশ্য হলো সংহতি গড়ে তোলা এবং নীতিগত অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্তাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী -এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাক এর চেয়ারপার্সন ও তত্তাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

মতবিনিময় সভায় গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এর ব্যাপারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। তিনি উল্লেখ করেন নারী অধিকার আদায় সহজ কোন বিষয় নয়, এ দাবি বহুদিন ধরে চলছে। তবে আশাবাদী আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে সক্ষম হবো।

এছাড়াও গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। তিনি বলেন, অস্বিকার করার উপায় নেই সংগ্রাম চলছে। নারী সংস্কার কমিশন গুরুত্বপূর্ন ছিলো। তিনি উল্লেখ করেন যারা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিরোধিতা করছে তা চিহ্নিত হয়েছে। তবে আমরা আশাবাদী আমাদের স্বল্প সময়ের মধ্যেই আনেক দাবি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারবো। তিনি কিছু সুপারিশ নারী ও শিশু নিয়াতনের দাবির সাথে যোগ করার পরামর্শ প্রদান করেন। সাইবার বুলিংটা নিয়ে আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। আছিয়ার ঘটনাটা আপনারা দেখেছেন। যারা এই ধরনের নির্যাতনের মতো ঘটনায় যুক্ত তারা পুরুষও না কাপুরুষও না, তারা জন্তু। এদের জন্য আমাদের শিশুরা প্রাণ হারাচ্ছে। আমরা চাই এই অপরাধীদের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই।

মতবিনিময় সভায় সম্মানিত অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত উপপুলিশ মহাপরিদর্শক, পুলিশ অধিদপ্তর, ঢাকা, তাপতুন নাসরীন, তিনি বলেন, ঘোণাপত্রের ১৬টি বিষয়েই বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করছে। তিনি আশ্বাস প্রদান করেন নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে প্রাপ্ত তথ্য তিনি কর্মক্ষেত্রে চর্চা করতে সকলকে অনুরোধ জানাবেন। তবে এসব অন্যায়রের মূল কারণগুলি খঁজে বের করে ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর নির্বাহী পরিচালক, শাহীন আনাম, প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অধিকার সমান সমান হওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন। আইনজীবী, বিশিষ্ট আইনবিদ, সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং আইনকর্মী ব্যরিস্টার ড. শাহদীন মালিক বলেন শাস্তি বেশি হলে অপরাধ প্রবণতা কমবে। নারীর প্রতি সহিসংতা কমাতে বিচার ব্যবস্থা আরো কঠোর করেতে হবে। নিজেরা করি, সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর খুশি কবীর বলেন, আমরা সবাই স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নারীর প্রতি সহিংসতা কোনভাবে মেনে নেওয়া যাবে না। নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করার ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। তিনি উল্রেখ করেন ঘোষণাপত্রের দাবিগুলোর সাথে সহমত তবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নারীদের বিষয়টি সংযোগ করতে হবে। এ বিষয় নিয়ে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।

শুভেচ্ছা বক্তব্য এবং কর্মসূচির উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন তপন কুমার দাশ, উপ-পরিচালক, গণসাক্ষরতা অভিযান। মতবিনিময় সভায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক ‘ঘোষণাপত্র’ পাঠ করেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল-বাংলাদেশ-এর ইয়ং প্রফেশনালস জেনেট পাপড়ি রায় এবং ইয়ূথ এগেইনষ্ট হাঙ্গার এর আহ্বায়ক শাহনেওয়াজ শিহাব। ৮টি সহযোগী সংগঠনের পক্ষে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারী ও শিশুর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা রোধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে ১৬টি সুনির্দিষ্টি দাবি উপস্থাপন করা হয়।

এছাড়াও সভায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান দাবির প্রতি সংহতি জানান এবং নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভবিষ্যত কি তা জানানোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

মতবিনিময় সভায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, গণসাক্ষরতা অভিযান কাউন্সিল প্রতিনিধি, এডুকেশন ওয়াচ-এর প্রতিনিধি, শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, আন্তর্জাতিক সংগঠন, ঢাকাস্থ দূতাবাসের প্রতিনিধি, ব্র্যাক, গণসাক্ষরতা অভিযান, এডুকো, মানুষের জন্য ফাউনন্ডেশন, নেটজ বাংলাদেশ, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল-বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন-বাংলাদেশ, সাইটসেভার্স বাংলাদেশ-এর প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যম কর্মীসহ প্রায় ২ শতাধিক অংশগ্রহনকারী অংশ নেন ।

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা একজোট ঘোষণাপত্রে যা ছিল:

সুধী,
আজকের এই আয়োজনের উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আমরা সবাই জানি যে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ক্রমাগত উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত “নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০২৪”-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রায় ৭০% নারী তাদের জীবদ্দশায় কমপক্ষে একবার নিজ গৃহেই কোনো না কোনো ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এসব সহিংসতার মধ্যে রয়েছে শারীরিক, যৌন, মানসিক ও অর্থনৈতিক নির্যাতন এবং পুরুষতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ। দুঃখজনক হলেও সত্য, শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণসহ আরো কিছু সূচকে অগ্রগতি হলেও অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ক্ষেত্রে নারীর মর্যাদা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের ফলে বাংলাদেশ বৈশ্বিক লিঙ্গ বৈষম্য সূচকে ৪০ ধাপ পিছিয়ে ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে ৯৯তম স্থানে রয়েছে। (গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট-২০২৪)।

আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি প্রকাশিত “নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন” প্রতিবেদন-এর পরিপ্রেক্ষিতে এক ধরণের প্রতিক্রিয়াশীল মহল নারী-বিরোধী এবং ঘৃণা-প্রচারমূলক প্রচারণা শুরু করেছে যা সংবিধানে স্বীকৃত নারী-পুরুষ সমতার অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও পাবলিক ফোরাম-কে ক্রমবর্ধমানভাবে নারীদের কণ্ঠরোধ, অবমাননা, অপদস্থ করা এবং ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর্থ-সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সমাজের সর্বস্তরের নারী যেমন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, চিকিৎসক, উন্নয়নকর্মী, শ্রমজীবী নারী এমনকি গৃহকর্মীরাও আজ হেনস্তার শিকার হচ্ছেন এবং চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। উদ্বেগের বিষয় হলো, এ ধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান এখনো আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়, এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে কোন সুস্পষ্ট বক্তব্যও আমরা পাইনি, যার ফলে নারীর মৌলিক অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে এবং গভীর উদ্বেগ ও আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।

সংগ্রামী সহযোদ্ধা,
বাংলাদেশ “শিশু অধিকার সনদে” স্বাক্ষরকারী একটি দেশ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG)-৫ অনুযায়ী নারী-পুরুষ সমতা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সঙ্গে, আমরা সচেতন নাগরিক এবং সর্বোপরি মানবিক মানুষ হিসেবে দেশের সকল নারী ও শিশুর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় আমাদের সকলের একটি নৈতিক দায়বদ্ধতা রয়েছে, যা আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যেও পড়ে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, নীতিনির্ধারক, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সচেতনতা এবং সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে একটি সমন্বিত ও যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা আমাদের সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব।

প্রিয় সহযোগী,
নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা একজোট। আজকের এই মতবিনিময় সভা থেকে আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহ, সিএসও অ্যালায়েন্স, নারী আন্দোলনের প্রতিনিধি, তরুণ সমাজ, এবং রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, পরিবেশ কর্মী, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি- আসুন, আমরা সম্মিলিত উদ্যোগে একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন ও সমঅধিকারভিত্তিক মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

আমরা বিশ্বাস করি, এই মতবিনিময় সভা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে, যা নারী ও শিশুর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা মোকাবিলায় একটি জাতীয় ঐক্যমত গঠনে সহায়তা করবে এবং একটি কার্যকর ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের পথ সুগম করবে।
নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে আমাদের এই যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত দাবির বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং দেশের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারী ও শিশুর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা রোধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আমাদের সুনির্দিষ্ট দাবিসমূহ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি-
১. নারী ও শিশুর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা রোধে “শূন্য সহিষ্ণুতা” ঘোষণা করতে হবে। যে সকল নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. নারী ও শিশুদের উত্ত্যক্ত করা, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণসহ পৃথক পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন করতে হবে। উপর্যুক্ত আইনসহ বিদ্যমান আইন ও বিধি-বিধান যথাযথ বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সু-নির্দিষ্ট দায়-দায়িত্ব প্রদানপূর্বক “মনিটরিং সেল” গঠন করতে হবে।
৩.নারীর মর্যাদাহানীকর সকল প্রকার প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে অনেক সময় বিভিন্ন কর্মসূচী বা অনুষ্ঠানের আগে বা পরে নারী বিদ্বেষী, নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এমন বক্তব্য প্রদানকারীদেরকে আইন অনুয়ায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. নারী ও শিশুর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতার মামলা দ্রুত নিস্পত্তি করতে হবে। নিকটস্থ থানা কর্তৃক মামলার বাদী/ভিকটিমের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে।
৫.কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি, নির্যাতনসহ অনলাইন এবং সাইবার বুলিং এর শিকার হওয়া থেকে নারীদের নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে কার্যকর কর্মকৌশল প্রণয়ন করতে হবে এবং সর্বসাধারণকে অবহিত ও সচেতন করতে হবে।
৬.নীতি-নির্ধারণী সকল পর্যায়ে নারীর সমঅংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমকাজে সমান মজুরী নিশ্চিত করতে হবে।
৭. নারী গৃহশ্রমিকসহ সকল নারী শ্রমিকের সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। তাদের নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং শ্রম আইনে তাদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৮. বাল্যবিবাহ বন্ধে প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। বাল্য বিয়ে নিরোধ করার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে মেয়েদের জন্য শোভন কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
৯. শিক্ষা, প্রযুক্তি, জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন এবং সব বয়সী নারীর সু-স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে। সকল প্রতিষ্ঠানে মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে হবে এবং আন্ত:মন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে সেটি মনিটরিং করতে হবে।
১০. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন কোন ধরনের নির্যাতন/ নিপীড়ন না হয় তার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
১১. সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ ও নাগরিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে প্রচারাভিযান ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে।
১২. নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের জন্য “ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার” (OCC) এর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের সেবার মান উন্নয়ন করতে হবে। সেবা প্রদানকারীদেরকেও জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং পুলিশ-এর Victim Support Centre বৃদ্ধি করতে হবে। বেসরকারি সংগঠনগুলোকে সরকারি আইন সহায়তা কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করতে হবে।
১৩. নারীর অধিকার আদায়ের যে কোনো আন্দোলনকে দলীয় রাজনৈতিক রূপ দেয়ার কিংবা হয়রানী করার অপচেষ্টাকে রুখে দিতে হবে। নারীকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করার প্রবণতা কঠোরভাবে দমন করতে হবে।
১৪. সকল ক্ষেত্রে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা বৃদ্ধিসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে অতি সত্ত্বর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে ‘হেল্প ডেস্ক’ চালু করতে হবে। এ কাজে দক্ষ এনজিও, অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, এফএম রেডিও ও কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
১৫. নারী ও শিশু নির্যাতনের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও সংশ্লিষ্ট সকলকে সময়মতো অবহিত করার জন্য পৃথক বডি/পরিষদ বা কাঠামো তৈরি করতে হবে।
১৬. নারী ও শিশুর সুরক্ষা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা কোন একক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়। তাই এক্ষেত্রে আমরা আন্ত:মন্ত্রণালয় সমন্বয়ের জোর দাবী জানাচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews