সভা শুরু হয় গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক তপন কুমার দাস-এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর)-এর অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ। তিনি নেটজ বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত গবেষণার প্রধান ফলাফল তুলে ধরে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠ পরিকল্পনা থাকলেও দলগত কাজ, শিক্ষণ সহায়ক উপকরণের ব্যবহার, গঠনমূলক মূল্যায়ন এবং শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সহায়তার মতো শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক শিক্ষণ অনুশীলনের কার্যকর প্রয়োগ এখনো সীমিত—বিশেষ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে। তিনি আনন্দলোক মডেল স্কুলগুলোকে ভালো অনুশীলনের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক শিক্ষা জোরদারে ব্যবহারিক শিক্ষক নির্দেশনা, ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ও নীতিগত সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অন্যান্য সংগঠনগুলোর উদ্যোগ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় পর্বে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা প্রফুল্ল চন্দ্র বর্মণ এবং রুম টু রিড-এর অ্যাডভোকেসি ও স্টেকহোল্ডার এনগেজমেন্ট ম্যানেজার হাফিজুর রহমান আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক শিক্ষণপদ্ধতির প্রয়োগ, চ্যালেঞ্জ ও অর্জিত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী-এর সঞ্চালনায় উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে নীতিগত সীমাবদ্ধতা, শিক্ষক সক্ষমতা উন্নয়ন, পাঠ্যক্রমের নমনীয়তা এবং শ্রেণিকক্ষভিত্তিক চর্চা নিয়ে আলোচনা হয়। এ পর্বে বক্তব্য রাখেন এশিয়া সাউথ প্যাসিফিক অ্যাসোসিয়েশন ফর বেসিক অ্যান্ড অ্যাডাল্ট এডুকেশন (ASPBAE)-এর ক্যাপাসিটি সাপোর্ট এডভাইজার কেএম এনামুল হক, টিচার্স ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট-এর পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হক, কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার শরিফুল ইসলাম, বাংলা ট্রিবিউন এর বিশেষ সংবাদদাতা এস এম আব্বাস, , বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি এনামুল হক, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ এবং ব্র্যাক-আইইডি এর সিনিয়র ম্যানেজার নাহিদ পারভীনসহ অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা।
অনুষ্ঠানে নির্ধারিত অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সাবেক প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা পরামর্শক কমিটির সদস্য চৌধুরী মুফাদ আহমেদ।
সম্মানিত অতিথি বক্তা (Guest of Honor) হিসেবে বক্তব্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। তিনি বলেন, শিক্ষক প্রশিক্ষণে মোটিভেশনের ঘাটতি চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তা সমাধানে প্রশিক্ষণ মডিউল সংশোধন করা হচ্ছে। শিক্ষকদের জন্য প্রি-সার্ভিস ডিপ্লোমা এবং শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে মিড-ডে মিল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে এবং সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও শিগগিরই ইতিবাচক অগ্রগতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে। অভিভাবকদের সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়; এ ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও নাগরিক সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগ অপরিহার্য।
সভা শেষে নেটজ বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ও ম্যানেজমেন্ট টিম মেম্বার আফসানা বিনতে আমিন ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট