1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
সেনাপ্রধানের সঙ্গে ডব্লিউজিইআইডির ভাইস চেয়ারপারসনের সাক্ষাৎ এক লাখ শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি, যেসব কারণে বাদ হতে পারে আবেদন পলাশবাড়ীতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, সেনা হস্তক্ষেপে যাত্রীদের অর্থ ফেরত পায়ের ব্যথা যেসব রোগের লক্ষণ হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ বর্ষার শুরুতেই সপ্তাহব্যাপী বৃষ্টির বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর হরমুজ প্রণালী: ইরানের এক অদৃশ্য কিন্তু কার্যকর অস্ত্র ঈদের দীর্ঘ ছুটি শেষে আগামীকাল রবিবার অফিস খুলছে সোনাতলায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি পরিবারকে শিল্পপতি রিপনের আর্থিক অনুদান প্রদান মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে ১৬ ‍দিন পর আন্দোলন স্থগিত করল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি

নিজের পরাজয়ে যাদের দায়ী করলেন হাসানুল হক ইনু

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর ও ভেড়ামারা) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে টানা তিনবার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে ২৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন তিনি।

হাসানুল হক ইনুকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এই আসনে সংসদ সদস্য হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন ট্রাক প্রতীকে ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট।

মহাজোটের বিজয়কে অভিনন্দন জানিয়ে নিজের পরাজয়ের জন্য দুষলেন প্রশাসনের পরিকল্পিত নিষ্ক্রিয় ভূমিকা, পরিকল্পিত ভোটের কারচুপি ও বিরুপ পরিস্থিতিকে । কালো টাকার ছড়াছড়ি ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার জন্যই তিনি মূলত হেরেছেন বলে উল্লেখ করেন। তাই চাপা ক্ষোভ নিয়েই তিনি প্রশাসন ও মহাজোটের বিরুদ্ধে কথা বলেন।

এদিকে ইনুর পরাজয়ের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন। তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রাখেন না ইনু। উল্টো নির্যাতন, নিপীড়ন, অপমান, অবহেলা ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেন। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর নির্বাচনের হাওয়া ঘুরে যায়। মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ বাধ্য হয়ে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে মিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করেন। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নানা কারণে দ্বন্দ্ব প্রকট হয় ইনুর। ফলে এবার বিরোধিতার মুখে পড়ে তিনি।

এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হালিম বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। গত ১৫ বছরে আমাদের নেতাকর্মীরা নির্যাতিত হয়েছে। সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। গত ৫ বছরে ৫ বারও আমাদের খোঁজ নেননি ইনু। তার সাথে আমার কথাও হয়নি। আমি যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হয়েছি, সেখানে অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই কারণে মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কামারুল আরেফিনকে নির্বাচনে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ইনুর ১৫ বছরের নির্যাতন-নিপীড়নের ফসল হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়।

তিনি বলেন, উনি (ইনু) শুধুমাত্র নৌকা প্রতীক নিয়ে এসে এমপি হন, পরবর্তীতে জাসদ হয়ে যান। এই কারণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও এলাকার মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে এই নির্বাচনে। নৌকার বৈঠা মারি আমরা, মিরপুর ও ভেড়ামারায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব আছে। সেটা আমরা দেখিয়ে দিয়েছি। ইনু নৌকা নিয়ে তিনবার জিতেছেন। এবার প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে জাসদের বিরুদ্ধে আমরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কামারুল আরেফিনকে জয়যুক্ত করেছি। মিরপুর ভেড়ামারায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সুসংগঠিত

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভোটে ইনু তিনবার এমপি হয়েছেন। এমপি হওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভুলে যান। নির্যাতন ও অবহেলা করেন। সেই ক্ষোভে ভেড়ামারা-মিরপুরের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একাট্টা হয়ে কামারুলের ট্রাক প্রতীকের পক্ষে লড়াই করেন। কামারুলের সঙ্গে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হালিম, ভেড়ামারা উপ‌জেলা আওয়ামী লী‌গের সভাপ‌তি র‌ফিকুল আলম চুন্নু, সাধারণ সম্পাদক সামিউল ইসলাম সানা ও উপজেলা চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান মিঠুর মতো শীর্ষ নেতারা ছিলেন।

অপরদিকে ইনুর নির্বাচিত এলাকা মিরপুর ভেড়ামারার জনসাধারণ তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ করেন। মাদ্রাসা, মসজিদ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে তিনি বাঁকা চোখে দেখতেন। কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী ছিলেন। যা নিয়ে স্বয়ং আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা অত্যান্ত বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।
বিগত সময়ে তিনি দেশের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন মরহুম আল্লামা আহমদ শফী সাহেবকে সব সময় তেঁতুল হুজুর আখ্যায়িত করে মাঠে ময়দানে বক্তব্য দিতেন। দেশের মিডিয়াকে একপেশে করে রাখার চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রও তার ছিলো বলে সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ মতপ্রকাশ করেন।

নির্বাচনে পরাজয়ের পর জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, আমি ১৫ বছর এই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে হাঁটছি-চলছি। আমি আমার সাধ্যমতো এই এলাকার মানুষের পাশে থেকে উন্নয়ন করছি, শান্তির পথ তৈরি করেছি। সবাই খুশি হবে আমি তা মনে করি না। গত ১৫ বছরে ইনু অনিয়ম, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, ঘুষ বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য করেনি।

নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিন গণমাধ্যমকে বলেন, মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার মানুষের কল্যাণে এবং শান্তির জন্য আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ সার্বিক উন্নয়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবো।

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত জাসদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের শরিক হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। ইনুকে চ্যালেঞ্জ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন গত ২৮ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন কুষ্টিয়া-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন এবং এমপি নির্বাচিত হন। ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে উঠে আসা এই নেতা দলের তৃণমূলেও বেশ জনপ্রিয়।

আশির দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন কামারুল আরেফিন। এরপর তিনি যুবলীগের রাজনীতি শুরু করেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন। পরে হামলা-মামলায় টিকতে না পেরে এলাকা ছেড়ে চলে যান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি এলাকায় ফিরে আসেন। ২০১১ সালে মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) থেকে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হন বিপুল ভোটে। পরে তিনি মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ২০১৪ সালের পর ইউপি চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন করে জয়ী হন। এরপর ২০১৮ সালেও একই পদে জয়ী হন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews