জন্মের পর থেকে অর্থাৎ প্রায় ১৬ বছর ধরে বিরল রোগে আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছে কাবিল উদ্দিন নামে এক কিশোর। ভীষণ কষ্টে তার জীবন কাটছে। সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের দশ নম্বর গ্রামের (ওয়াপদা বাঁধের উপর) গিয়াস উদ্দিনের একমাত্র ছেলে সে। যখন তার বয়স দুই মাস তখন তার শরীরে দেখা দেয় চর্মরোগ। প্রথমে স্থানীয় ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করা হয়। এতে আরোগ্য না হওয়ায় পরে রংপুর ও বগুড়ায় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু কোনো আরোগ্য না হওয়ায় বরং দিন দিন তার সারা শরীরে ছেয়ে গেছে মারাত্মক এই ব্যধি। অনেকে মনে করেন এটি একটি বিরল রোগ। রোগটি ঘায়ে পরিণত হয়েছে। সারা শরীর চুলকায়,ব্যথা ও জ্বালা-যন্ত্রণা হতে থাকে সারাক্ষণ। এ ভাবে ১৬টি বছর ছেলেটি কষ্ট করে আসছে। ছেলের চিকিৎসার জন্য দরিদ্র মা-বাবা পাড়া প্রতিবেশিদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এ পর্যন্ত অনেক অর্থ ব্যয় করেছে । চিকিৎসা করে কোনো উন্নতি না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন মা-বাবা। কতই আর কষ্টের ঘানি টানে মা-বাবা। নদী ভাঙ্গনের ফলে এই পরিবাটি ওয়াপদা বাঁধের ওপর বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে। কাবিল উদ্দিনের সমবয়সীরা ও প্রতিবেশিরা জানান এ বয়সে তার লেখাপড়ার কথা। কিন্তু বিরল এই রোগের জন্য লেখাপড়া করা সম্ভব হচ্ছে না। শরীর থেকে ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ। এজন্য অনেকে তার কাছে যেতে চায় না। কয়েক মাস ধরে টোটকা কবিরাজী চিকিৎসা চলছে।
কাবিল উদ্দিন জানায় অন্যদের মতো আমিও লেখাপড়া করতে চাই। কিন্তু শরীরের দুরাবস্থা দেখে স্যারেরা আমাকে স্কুলে ভর্তি করে নেয় না। তার মা-বাবা বলেছেন,ছেলেটির চিকিৎসা বাবদ প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছি। এতে আমরা হয়েছি নিঃস্ব। নিরুপায় হয়ে কবিরাজি চিকিৎসা করাচ্ছি। সুচিকিৎসা করতে মোটা অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। এজন্য সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান মানুষদের কাছ থেকে সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে পাকুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান লতিফুল বারী টিম বলেছেন দীর্ঘদিন ধরে কাবিল উদ্দিন চর্মরোগে ভুগছে। সে আর্থিক সহযোগিতা ও সঠিক চিকিৎসা পেলে হয়তো সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শারমিন কবিরাজকে সম্প্রতি অবগত করা হলে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রের টিএলসিএ মোঃ হযরত আলীকে পাঠায় কাবিল উদ্দিনের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিতে। হযরত আলী সেখান থেকে এসে ডাক্তার শারমিন কবিরাজকে কাবিল উদ্দিনের শারীরিক পরিস্থিতি জানিয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট