বগুড়ার ঐতিহাসিক সাতমাথায় উদীচীর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীতের কর্মসূচিতে হামলা, দেশজুড়ে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার প্রতিবাদে এবং ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের আহতের ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা সংসদের “সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত ও প্রতিবাদ সমাবেশ” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৭ মে শনিবার বিকাল ৫ টা ৩০ মিনিটে কর্মসূচির শুরুতে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। জাতীয় সংগীত শেষে ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলার সভাপতি বায়েজিদ রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জয় ভৌমিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সিপিবি বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, কৃষক সমিতি বগুড়া জেলার সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী শেখ, যুব ইউনিয়ন বগুড়া জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান পারভেজ, ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলার সাবেক সভাপতি ছাব্বির আহম্মেদ রাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক আফ্রিক হাসান প্রান্ত, মেহেদী হাসান রনি, শাওন শওকত, রাকিব হাসান, লিমন পারভেজ, পলাশ চন্দ্র, সোহাগ চন্দ্র প্রমুখ।
গত ১৪ মে বুধবার উদীচীর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীতের কর্মসূচিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের আড়ালে উগ্র, মৌলবাদী, সন্ত্রাসীদের হামলা, দেশজুড়ে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার প্রতিবাদে এবং ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের আহতের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, “জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত কারো দানে পাওয়া না– ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এগুলো অর্জন করা হয়েছে। কিন্তু, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকেই একটি স্বার্থান্বেষী ধর্মান্ধ গোষ্ঠী জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের মূল সুরকে নস্যাৎ করার চক্রান্তে লিপ্ত। জাতীয় সংগীতের আয়োজনে হামলা প্রমাণ করে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী শক্তি এখনো সক্রিয় এবং এ আঘাত আমাদের অস্তিত্বের উপরে আঘাত। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে কোনভাবেই নস্যাৎ হতে দেয়া যাবে না। সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।”
নেতৃবৃন্দ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনায় বাঁধা, রাজনৈতিক ও সংস্কৃতি কর্মীদের উপর হামলা, উদীচী কার্যালয় ভাঙচুর, ছাত্র নেতাসহ অন্যান্যদের উপর হামলার প্রতিবাদ ও অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এছাড়া সমাবেশ থেকে বক্তারা, অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার যথাযথ তদন্তপূর্বক বিচারের দাবি জানান। পাশাপাশি শ্রম ভবনের সামনে অবস্থানকারী টিএনজেড শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সংহতি জানানো এবং গতকাল নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে অনলাইন অফলাইনে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদ জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
সমাবেশ শেষে একটি প্রতিবাদ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।