চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউজের একটি কক্ষ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদের (৭৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ক্লাবের ৩০৮নং রুমের বারান্দার গ্লাস ভেঙে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এম হারুন-অর-রশীদের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায়। তবে তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ঢাকা থেকে এসে ক্লাবের ৩০৮ রুমে রাত্রিযাপন করেছিলেন এম হারুন-অর-রশীদ। সকালে তার একটা মিটিং ছিল। কিন্তু তার মোবাইলে বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি রেসপন্স করছিলেন না। এরপর স্বজনরা আসেন। দরজায় নক করা হলেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পরে বারান্দায় গ্লাসের দরজা ভেঙে বিছানায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। রাতে তিনি একটি বিয়ের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করেছিলেন।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, সাবেক সেনাপ্রধান হারুন রোববার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছান। বিকেল ৪টায় তিনি চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি ভিআইপি কক্ষে ওঠেন। ঘণ্টাখানেক পর তিনি ক্লাব থেকে বেরিয়ে রাত পৌনে ১১টায় ফেরেন। কক্ষে ঢোকার আগে তিনি ডেস্কে গিয়ে ব্রেকফাস্টের সময় জেনে নেন।
উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সাবেক সেনাপ্রধান গতকাল (রোববার) রাতে কোথাও দাওয়াত খেয়ে ক্লাবে ফিরে আসেন। আজ সকালে তার একটা প্রোগ্রাম ছিল। সকাল ১০টায়ও কক্ষ থেকে বের না হওয়ার উনার আর্মি প্রটৌকল টিমের সদস্যদের সন্দেহ হয়। পরে ক্লাবের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে কক্ষের পেছনে কাচের জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান, তিনি মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। আমাদের ধারণা, তিনি স্ট্রোক করেছেন। আমরা ময়নাতদন্ত করার কথা বলেছি। এখন উনার পরিবার যা সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই হবে।’
সিএমপি কেতোয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এম হারুন-অর-রশীদের পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রাম ক্লাবে এসেছেন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রামের চিকিৎসকদের একটি দলও চট্টগ্রাম ক্লাবে এসে সাবেক সেনাপ্রধানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’
সাবেক সেনাপ্রধানের নিকটাত্মীয় এনাম আহমেদ সমকালকে বলেন, ‘আজ উনার একটি মামলায় আদালতো হাজিরার কথা ছিল। সেজন্যই মূলত তিনি ঢাকা থেকে এসেছিলেন। চট্টগ্রাম ক্লাবের ভিআইপি রুমে একাই ছিলেন তিনি।’
এম হারুন-অর-রশীদ বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত তিনি দেশের দশম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অবসরে যাওয়ার পর হারুন উর রশীদ ডেসটিনির সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত হন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলও খাটেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট