1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৫ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
ময়মনসিংহে ‘আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা: অংশীজনের প্রত্যাশা’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা নেত্রকোণায় নৃগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা: অংশীজনের প্রত্যাশা বিষয়ক মতবিনিময় সভা সোনাতলায় মাদকের ব্যপকতা প্রতিরোধে বিক্ষোভ সমাবেশ সোনাতলায় মাদক নির্মূলের দাবিতে নাগরিক কমিটির স্মারকলিপি প্রদান বৈশ্বিক অর্থায়ন সংকটের প্রেক্ষিতে এনজিওদের বর্তমান অবস্থা ও করণীয় বিষয়ক মতবিনিময় সভা প্রবীন নাট্যকর্মী বাবলু খানের মৃত্যুঃ বিভিন্ন মহলের শোক পশ্চিম বঙ্গের কবি মনিকা রায়ের কবিতার ডায়েরি থেকে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত বিএনপি নেতা মতিন কাজীর চিকিৎসার খোঁজ নিলেন ভিপি সাইফুল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ শ্রিম্প অ্যান্ড ফিস ফাউন্ডেশনের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

ময়মনসিংহে ‘আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা: অংশীজনের প্রত্যাশা’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা

স্টাফ রিপোর্টার:
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫
ময়মনসিংহে ‘আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা: অংশীজনের প্রত্যাশা’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার আহমেদ।

আজ বৃহস্পতিবার ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ময়মনসিংহের গ্রীণ সিটি ট্রেনিং সেন্টারে স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি এবং গণসাক্ষরতা অভিযানের আয়োজনে “আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা: অংশীজনের প্রত্যাশা” বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার পাল।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার আহমেদ। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্কুল মিলের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের দেশেও স্কুল মিল কার্যক্রমকে বেগবান করতে হবে। আদিবাসীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ের প্রশাসনে যাঁরা আছেন তাঁরা অধিকতর সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন। শিক্ষক নিয়োগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। আদিবাসীদের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করাও একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব সেক্ষেত্রে তাঁদের প্রবেশগম্যতা বৃদ্ধির জন্য কিছু বিশেষ উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।

সভায় “আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা: অংশীজনের প্রত্যাশা” বিষয়ক মুল আলোচনা পত্র উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একেএম মাজহারুল ইসলাম। দারিদ্রতা আদিবাসীদের জীবন জীবিকা ও শিক্ষায় অভিগম্যতাকে বাঁধাগ্রস্থ করে। আদিবাসী শিশুদের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি ও ঝরে পড়ার কারণ হিসেবে শিশুশ্রম ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের ব্যবহার, মাদকাসক্তি ও বাল্যবিবাহকে প্রধানত দায়ী করেন তিনি। এর পাশাপাশি জীবিকার সন্ধানে অভিভাবকদের সাময়িক অনুপস্থিতি এবং শিশুদের শিক্ষার প্রক্রিয়ায় অভিভাবকদের অমনোযোগীতা ও অংশগ্রহণের ঘাটতি এই ঝুঁকিকে আরো বাড়িয়ে তোলে। আদিবাসী ভাষার শিক্ষকের অপ্রতুলতা, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে অসমতা, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে প্রস্তুতির ঘাটতি আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জীবনকে আরো ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। শিখনফল ঘাটতি নিরসনে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতা বাড়ানোর সুপারিশ করেন তিনি।
নির্ধারিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন এশিয়া সাউথ প্যাসিফিক অ্যাসোসিয়েশন ফর বেসিক এন্ড অ্যাডাল্ট এডুকেশন এর ক্যাপাসিটি সাপোর্ট অ্যাডভাইজার কেএম এনামুল হক। তিনি বলেন, শিক্ষার সংস্থান, প্রবেশগম্যতা, মান ও অভিযোজন শিক্ষা অধিকার অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এ গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, আদিবাসী এলাকায় বিদ্যালয়ের অপর্যাপ্ততা, প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকা এবং পর্যাপ্ত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি না থাকায় আদিবাসী শিশুরা নানাবিধ ঝুঁকির মুখোমুখি হয়। যা তাঁদের শিক্ষা জীবন ব্যহত করে। এ থেকে উত্তরণের জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, মাতৃভাষায় শিক্ষা, শিক্ষকের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নসহ সামাজিক সুরক্ষা বলয় বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের দাবিও জানান তিনি।

সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, গণসাক্ষরতা অভিযান ঢাকার প্রোগ্রাম অফিসার সিজুল ইসলাম। এছাড়াও উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্বপ্না পাপুল, আনন্দ মোহন কলেজের দর্শন বিভাগের আশরাফ-উজ জামান, সহকারী অধ্যাপক নওরীন সামান্তা সৌমি, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (ন্যাপ) এর প্রোগ্রামার মোস্তাফিজুর রহমান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হারুন-অর রশীদ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাজনীন সুলতানা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ইউসূফ খান, সেবা’র নির্বাহী পরিচালক ইউসূফ আকন্দ মজিবুর, ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন, হালুয়াঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান, হালুয়াঘাট সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাহমুদুল হাসান, মুক্তাগাছার সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাহিদা সুলতানা, হালুয়াঘাট কমিউনিটি এডুকেশন ওয়াচ গ্রুপের সংগঠক বুলবুল রিচিল, গার্লস ফোরামের অপ্সরা দালবৎ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির প্রজেক্ট ম্যানেজার ইমন সরকার।

সভায় ময়মনসিংহ সদর ও হালুয়াঘাট উপজেলার গারো, হাজং সম্প্রদায়সহ আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষা কর্মকর্তা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উন্নয়নকর্মী, জনপ্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অর্ধশতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উন্মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা অর্জনে চ্যালেঞ্জ, সীমাবদ্ধতা এবং করণীয় নিয়ে তাঁদের মতামত এবং সুপারিশ তুলে ধরেন। উন্মুক্ত আলোচনায় অন্যান্য আলোচকরা বলেন, কমিউনিটি ভিত্তিক স্কুল এর ব্যবস্থা করা সেইসাথে প্যারা শিক্ষক নিয়োগ করা, পুষ্টিহীনতা দূরীকরণে মিড-ডে মিল কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন করা, যাতায়াত বা পরিবহনের ব্যবস্থা করা, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মেয়েদের জন্য প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা করা, আদিবাসীরা দূর্গম এলাকাগুলোতে বসবাস করেন। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, দারিদ্রতা ও কর্মের জন্য রাজধানী বা অন্যত্র যেসব অভিভাবকরা চলে যান তাঁদের শিশু সন্তানরা অবহেলিত হচ্ছে। রাস্তাঘাটে আদিবাসী মেয়ে শিক্ষার্থীরা চলাচলের সময় সংখ্যাগুরুদের দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে এমনকি ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটছে।

সীমান্তঘেঁষা এই জেলায় বালু ও পাথর উত্তোলনের সাথেও শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়ছেন আদিবাসী শিশুরা। মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে শিক্ষা প্রদানে স্কুল, কমিউনিটি এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ জিও-এনজিওর সমন্বয় বৃদ্ধি করে কাজ করার সুপারিশ জানানো হয়। আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকাগুলোতে স্কুলে আবাসন সুবিধা যুক্ত করা, নিজ ইউনিয়নে শিক্ষকদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া যাতে সাংস্কৃতিক সংযোগ বজায় থাকে, দোভাষী শিক্ষকদের আলাদা প্রণোদনা দেওয়া, যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন করা, মেয়ে শিশুদের শিক্ষায় বিশেষ সুরক্ষা ও প্রণোদনা প্রদান করা, স্কুলে জাতিগত বৈষম্য, বুলিং ও অপমানের ঘটনা প্রতিরোধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া, প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় গুরুত্ব বাড়ানো, আদিবাসী দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বৃত্তি ও অর্থনৈতিক সহায়তা বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়। সবশেষে, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সচেতন করার উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করেন অংশগ্রহণকারীরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews