চীনের ফুজোউ শহরের ফুজিয়ান ইউনিভার্সিটি অব ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন-এর অধিভুক্ত দ্বিতীয় সংযুক্ত হাসপাতালে ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল দশটায় অনুষ্ঠিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সালমানি নূর কাজীসহ বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে ‘ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল হেলথ প্রোমোশন অ্যাম্বাসেডর’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

‘ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল হেলথ প্রোমোশন অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে সম্মাননা প্রাপ্তদের সাথে নুর (নিচে ডান থেকে দ্বিতীয়জন)
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাসপাতালের একটি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল চেকআপ সম্পন্ন করেন এবং প্রত্যেককে আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি ও হাসপাতালের সেবাব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন। চিকিৎসকরা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন (TCM)-এর বৈশ্বিক কার্যক্রম, এর গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ ভূমিকা সম্পর্কে দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা উপস্থাপন করেন। পরে শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা সনদ ও অ্যাম্বাসেডর ব্যাজ তুলে দেন হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তা ও অধ্যাপকবৃন্দ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদের সদস্যগণ, সিনিয়র ডাক্তার ও আন্তর্জাতিক বিভাগীয় দায়িত্বশীলগণ।
সম্মাননা প্রদানের সময় বক্তৃতায় কর্মকর্তারা বলেন—বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তি বিনিময়ে এমন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম, আধুনিক মেশিন সম্বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সহযোগিতা জোরদারে ভূমিকা রাখতে পারবেন।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সালমানি নূর কাজীকে এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা প্রদান করায় উপস্থিত সকলের মাঝে আনন্দ ও গর্বের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, “এই সম্মাননা আমাকে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সহযোগিতায় আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে। বিশেষ করে বাংলা ভাষাভাষি ও বাংলাদেশিদের চীনে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ আরো সহজতর করতে আমরা সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারবো। এব্যাপারে বাংলাদেশ থেকে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে যাঁরা স্বাস্থ্য সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট তাঁরাও যদি এগিয়ে আসেন তাহলে সেবাপ্রার্থিদের উন্নত ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে।”

‘ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল হেলথ প্রোমোশন অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে সম্মাননা গ্রহণ করছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সালমানি নূর কাজী।
সালমানি নূর কাজীর পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশের নীলফামারীতে। তবে সে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় বড় হয়েছেন। পড়াশোনা করেছেন লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি বয়েস হাই স্কুল এ। কোভিড পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালের শেষের দিকে স্কলারশীপ পেয়ে চীনের (Fuzhou University) ফুজোউ বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এ ডিপ্লোমাতে পড়াশোনার জন্য চীনে পাড়ি জমান। দেশে থাকা অবস্থায় সে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথেও যুক্ত ছিলেন। বিশেষ করে স্কুলে বিএনসিসি ও রেড ক্রিসেন্ট এর সাথে যুক্ত ছিলেন। জাপান ভিত্তিক সংস্থা হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদ প্লাটফর্ম, মানবিক সাহায্য সংস্থা ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর চাইল্ড পার্লামেন্ট। গণসাক্ষরতা অভিযানে গবেষণা সহকারী হিসেবেও স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া সে ঢাকা মৌলিক নাট্যদলেরও সদস্য ছিলেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট