ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামে প্রতিবন্ধী স্কুলে চাকরী দেওয়ার নামে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। টাকার জন্য চাকরী প্রত্যাশীরা ধর্না দিলেও তাদের টাকা ফেরৎ প্রদান করা হচ্ছে না।
সরজমিন তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালে হলিধানীর মাদ্রাসা পাড়ায় প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য ওই ইউনিয়নের ২৮ জনের কাছ থেকে ৮৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন একই ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আমোদ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম শফি ও হলিধানী গ্রামের মাদ্রাসার পাড়ার হাসেম ছায়ালের ছেলে আনোয়ার হোসেন। প্রার্থীদেরকে শিক্ষক, আয়া, ভ্যান চালক ও নৈশ প্রহরী পদে চাকরীর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ওই প্রতিবন্ধি স্কুল চলেনি। এদিকে ভুক্তভুগীর পরিবারগুলো চাকরী না পাওয়া বিভিন্ন মহলে ঘুরেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না বলে জানান।
ভুক্তভোগী শাম্মী আক্তার বলেন, প্রতিবন্ধী স্কুলের চাকরীর জন্য ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে হলিধানী ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে ইউনিয়নের সকল মেম্বারের উপস্থিতিতে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদের হাতে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরে স্কুল অনুমোদনের কথা বলে ভিন্ন সময় আনোয়ার হোসেন ও শফিকুল ইসলাম শফি আরো দুই লাখ টাকা ওয়ার্ড মেম্বার তাজুল ইসলামের উপস্থিতিতে প্রদান করেন। শাম্মী আক্তারের ভাষ্যমতে, দীর্ঘ ৫ বছর ধরে তাকে চাকরীর কথা বলে ঘোরানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
অপর ভুক্তভোগী রাবেয়া খাতুন জানান, তিনি প্রতিবন্ধী স্কুলে চাকরীর জন্য সর্ব প্রথম টাকা দিয়েছিলেন। চাকরী বাবদ হলিধানী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ, কথিত প্রধান শিক্ষক শফি এবং সভাপতি আনোয়ার হোসেনের কাছে ৩ লাখ টাকা দেন। সেই টাকা ফেরৎ প্রদান করা হচ্ছে না বলে রাবেয়া অভিযোগ করেন।
মিনান্নাহার কণা নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, চাকরীর জন্য তিনি মোট ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শফি’র হাতে দেন। এখন সেই টাকা দিচ্ছেন না প্রতারক সফি। তিনি এখন এলাকা ছেড়ে ঝিনাইদহে বসবাস করছেন।
এলাকাবাসির ভাষ্যমতে, কথিত প্রধান শিক্ষক শফি এর আগেও হলিধানী ইউনিয়নের শালিয়া গ্রামে প্রাইমারী স্কুল করার কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দেন।
এদিকে প্রতিবন্ধী স্কুলের ঘটনা শেষ না হতেই একই এলাকার প্রতাবপুর মাঠে আরেকটি প্রাইমারী স্কুল খুলে প্রতারণার নতুন জাল বিস্তার করেছেন। বিষয়টি এলাকাবাসি জানতে পেরে স্কুলটি বন্ধ করে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে কথিত প্রতিবন্ধি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শফি বলেন, প্রতিবন্ধী স্কুলের জমিটা বিক্র করার চেষ্টা চলছে। জমি বিক্রী হলে টাকা ফেরৎ দিয়ে দিবো।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট