কোথায় যেতে হবে জানেন শুধু কয়েকজন। রাতের দিকে চলতে থাকে এক সাজোয়া বাহিনী। এবারের গন্তব্যস্থল গণভবন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশকিছু লোক অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
রাত সাড়ে দশটায় পেছনে হাত বাধা অবস্থায় সিরাজ শিকদারকে হাজির করা হয় শেখ মুজিবের সামনে। তাকে দাড়িয়ে রেখেই প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব তখন আলাপে ব্যস্ত ছিলেন তার প্রাইভেট সেক্রেটারির সঙ্গে। এসময় সিরাজ সিকদার প্রশ্ন করেন, রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাউকে বসতে বলার সৌজন্যবোধ কি আপনার নেই?
সঙ্গে সঙ্গে একজন পুলিশ সুপার এগিয়ে এসে পিস্তলের বাট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। গণভবনে কথা কাটাকাটির পরে তাকে নিয়ে যেতে বলেন শেখ মুজিব। রাত তখন বারোটা।
২ জানুয়ারি ভোর পর্যন্ত অভুক্ত অবস্থায় তাকে রক্ষীবাহিনীর হেড কোয়ার্টারে আটকে রাখা হয়। রাত নয়টার দিকে তাকে নিয়ে আসা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরেকটু এদিকে। সেখানে হাত বাধা অবস্থায় রাস্তার উপর দাড় করিয়ে তাকে গুলি করা হয় বলে অনুমান করা হয়।
৩ জানুয়ারি তার লাশ হাসপাতাল মর্গ থেকে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আজিমপুর কবরস্থানে। কর্তৃপক্ষ সাধারণ কবরে তার লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছিলো। কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হন সিরাজ শিকদারের পিতা আব্দুর রাজ্জাক শিকদার। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘কবরের জন্য জায়গা কিনতে না পারলে আমি অস্বীকার করবো এ লাশ আমার ছেলের নয়। ‘ বাধ্যহয়ে কর্তৃপক্ষ নতি স্বীকার করে। ঠিক হলো মোহাম্মদপুর কবরস্থানে লাশ দাফন হবে কিন্তু পুলিশ পাহারায় থাকবে এক মাস। (লাল সন্ত্রাস সিরাজ সিকদার ও সর্বহারা রাজনীতি – মহিউদ্দিন আহমদ পৃষ্ঠা ১৮৯-১৯০)