পর্ব – ০২
কেরানীগঞ্জের কদমতলী থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রায়ই যেতাম পায়ে হেঁটে।বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে পুরনো ঢাকার ওপর দিয়ে প্রায়ই যাতায়াত হতো।সেদিনও পুরনো ঢাকার ওপর দিয়ে পায়ে হেঁটে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলাম। চানখারপুল শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের সামনে দিয়ে হাঁটতেই দেখতে পাই একটা মিছিল যাচ্ছে।তারা ধর্মীয় স্লোগান দিচ্ছে।দুই একজনকে জিজ্ঞেস করলাম কিসের মিছিল?তারা জানালো কুমিল্লায় মূর্তির পায়ে কোরআন রাখার ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল। আমার খুব কৌতুহল হলো।আমি মিছিলটাকে পায়ে হেঁটেই ফলো করতে লাগলাম।আমি পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোড দিয়ে যাতায়াত করতাম। মিছিলটা যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল সে রাস্তাটা আমি চিনি না।তবুও হেঁটে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ পায়ে হাঁটার পর একটা জায়গায় দেখলাম পুলিশ জড়ো হয়ে আছে। আর আমি রাস্তার পাশে দাড়িয়ে মিছিল দেখছিলাম।পুলিশ হুইসেল বাজিয়ে মিছিলটাকে ঘুরতে বলে। মিছিলের লোকজন ঘুরে অন্য একটা রাস্তা দিয়ে চলতে থাকলো।ঠিক তখনই পুলিশ পেছন থেকে মিছিলটাকে ধাওয়া দেয়। আমি ঠিক তার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলাম।যেহেতু দিনটা ছিল জুমার দিন তাই জুমার নামাজ পড়ে বেরিয়েছিলাম।মাথায় টুপি আর মুখে দাড়ি।পুলিশের ধাওয়ায় ভয় পেয়ে আমিও দৌড় দেই। সামনে একটা ঠেলাগাড়ি রাখা ছিল। আমি ঠেলাগাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলাম।তার সাথে আমার চোখের চশমাটাও খুলে ছিটকে গেলো। উঠে দাড়িয়ে চশমাটা জামার কাপড় দিয়ে মুছতে লাগলাম।ঠিক তখনই একজন পুলিশ পেছন থেকে জামার কলার চেপে ধরলো।আমি কাকুতি মিনতি করে অনেক বোঝালাম আমি এই মিছিলের সাথে জড়িত নই।কিন্তু পুলিশ কোনভাবেই বুঝতে রাজি না যে,আমি এই মিছিলের কেউ নই।পুলিশ আমাকে গাড়িতে উঠিয়ে থানায় নিয়ে গেলো। (চলবে)