কারাগারের মেডিকেল থেকে যখন ঘোষণা আসলো বাহির মেডিকেলে পাঠানোর কথা তখন ওয়ার্ডের ইনচার্জ ডেকে বললেন, ভাই আপনি তো ভি এই পি আসামী।আমাদের কিছু খরচ টরচ দিয়েন।এখানে কিছু জিনিস বলে রাখি।প্রত্যেক ওয়ার্ডে একজন করে ইনচার্জ দায়িত্বে থাকে।এই ইনচার্জ করা হয় বিশেষ করে কয়েদী বন্দীদের।এই ইনচার্জরা প্রত্যেক আসামির কাছ থেকে ওয়ার্ডের খরচ চান।আসামীদের আত্মীয় স্বজনরা বন্দীদের জন্য যা পাঠান সেখান থেকে ইনচার্জ রা ওয়ার্ড খরচ দাবী করেন।বন্দীরা ওয়ার্ডে ভালো থাকার জন্য ওয়ার্ড খরচ দিতে বাধ্য হন।যেহেতু আমার কোন সাক্ষাৎ আসে না এবং পরিবার থেকে কোন খরচ দেয়া হয় না সেহেতু আমি ওয়ার্ড খরচ দিতে অপারগতা প্রকাশ করি।কিন্তু বাহির মেডিকেলে পাঠানোর কথা আসলে ইনচার্জ খরচ দাবী করেন।আমি বললাম,আমার পরিবার থেকে আমাকে দেখতে আসলে খরচ চাইবো।তারা যদি খরচ দেয় তবে আমি ওয়ার্ড খরচ দিতে পারবো।ইনচার্জ আমার কথায় সায় দিলেন।কারাগারের মেডিকেল বিভাগে প্রবেশ করলে বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার জিজ্ঞেস করলেন, কি সমস্যা?বললাম,এরেস্টের আগে মানসিক রোগের ডাক্তার দেখানো হয়েছিল।ডাক্তার বলেছেন, সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত। বললেন,কোন ডাক্তার?বললাম, ড:জাকারিয়া সিদ্দিকী।তিনি বললেন মেডিকেলে পাঠিয়ে দিতে।বাহির মেডিকেলে যাবার সময় একজন কয়েদী এসে বললেন,আপনি তো বাহিরে অনেকের জন্য অনেক কিছুই করেছেন।এবার আমাদের জন্য কিছু করেন।মানে ভদ্রলোক কিছু চাচ্ছিলেন।বললাম,মানুষের জন্য করতে করতে আমি এখন শেষ ভাই।তাই আমাকে ক্ষমা করবেন।আমার পায়ে ডান্ডা-বেরি পড়িয়ে দেয়া হলো। আর হাতে দেয়া হলো হাতকড়া। আসামী যেন পালিয়ে না যায় তাই এ ব্যবস্থা।
তারপর গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হলো শেরে বাংলা নগরের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। এখানে পরীক্ষা – নিরীক্ষা করা হবে আমার রোগের ব্যাপারে।কোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছে। (চলবে)