বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে শীতের মধ্যেই আবার লোড শেডিংয়ে পড়তে পারে দেশ। যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হয়, তবে আবার ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করতে হবে, যা জ্বালানি খাতের ব্যয়ের বোঝা আরো বাড়াবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কম্পানি (বিসিপিসিএল), চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি লিমিটেডের (এনডাব্লিউপিজিসিএল) মধ্যে ৫০ঃ৫০ যৌথ উদ্যোগে।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়লা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে দেরি করছে। এ কারণে কয়লা আমদানি না করতে পেরে কমছে কেন্দ্রটির মজুদ। বিসিপিসিএল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে কয়লাসংকটের বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগকে অবহিত করেছে।
বিপিডিবির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলছেন, অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের ভর্তুকির টাকা দিচ্ছে না। এর কারণে তারা পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বকেয়া শোধ করতে পারছে না।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের মধ্যে একটি রক্ষণাবেক্ষণে থাকায় দৈনিক ছয় হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণ শেষে ১৯ জানুয়ারি থেকে ওই ইউনিট পূর্ণাঙ্গ উৎপাদনে যাবে। তখন প্রতিদিন ১০ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এদিকে কয়লা আমদানির জন্য ৭৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
দেশের সর্ববৃহৎ আলট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গত বছরের ২১ মার্চ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটটি ২০২০ সালের মে মাসে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। একই বছরের অক্টোবরে দ্বিতীয় ইউনিটটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় এবং সারা বিশ্বে ১১তম দেশ। এ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ছাড়া শুধু ভারতে এ ধরনের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে।