চলতি মাসে সেই আগের মতো তেল, ডাল ও চিনি ক্রয় করতে পারবেন। একজন কার্ডধারী চিনি কিনতে পারেন এক কেজি, দাম ৬০ টাকা; সয়াবিন তেল নিতে পারেন দুই লিটার, দাম ২২০ টাকা; ডাল নিতে পারেন দুই কেজি, দাম ১৪০ টাকা। এই তিন পণ্য কিনতে মোট খরচ হয় ৪২০ টাকা। আর খুচরা বাজার থেকে এক কেজি চিনি ১২০ টাকা, দুই লিটার সয়াবিন তেল (ফ্রেশ ও তীর) ৩৭৪ টাকা এবং দুই কেজি মসুর ডাল কিনতে ২৪০ টাকা লাগে। এতে টিসিবি থেকে দেওয়া সমপরিমাণ পণ্য খোলাবাজারে কিনতে খরচ হয় ৭৩৪ টাকা। অর্থাৎ একজন টিসিবির কার্ডধারী লাইনে দাঁড়িয়ে মাসে ৩১৪ টাকা কমে পণ্য কিনতে পারেন।টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে এক কোটি মানুষকে টিসিবির কার্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মিলে মোট ১৩ লাখ বাসিন্দাকে কার্ড দেওয়া হয়েছে। গত মাসে রোজা উপলক্ষে ছোলা ও খেজুরও দেওয়া হয়েছিল। চলতি মাসে ডাল, চিনি ও তেল সরবরাহ করা হচ্ছে, ২০ এপ্রিলের মধ্যে এগুলোর বিক্রি শেষ হবে। এক কোটি পরিবারকে দেওয়ার জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন চিনি, ২০ হাজার মেট্রিক টন ডাল এবং দুই কোটি লিটার তেল বরাদ্দ রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।সানেমের গবেষণা পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, ‘এখানে দুটি বিষয়। একটি হলো টিসিবিতে সব নিত্যপণ্য নেই। দ্বিতীয়ত, পরিমাণে যা দেওয়া হচ্ছে, তা দিয়ে সারা মাস চলে না। সার্বিকভাবে বলতে গেলে খুব বড় ধরনের সুবিধা হচ্ছে না। তার পরও বলব, সার্বিকভাবে এই উদ্যোগ ভালো। টাকার হিসাবে খুব বড় প্রভাব ফেলছে না, কিন্তু যাদের কথা আমরা বলছি, তাদের ক্ষেত্রে ওই পণ্যগুলো কেনার ক্ষেত্রে সামান্য উপকার হলেও তাতে ক্ষতি কী? তবে আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ে কথা বলছি। সে ক্ষেত্রে ওই জিনিসগুলোর দাম আরো কমানো যায় কি না, সেটা ভাবা দরকার। যে উপকারটুকু মানুষ পাচ্ছে, তা খুবই কম (মার্জিনাল)। তাই বলে উঠিয়ে ফেলা হোক, সেটা বলব না। পণ্যের সংখ্যা ও পরিমাণ আরো বাড়ানো এবং সরকার যদি আরো একটু ভর্তুকি দেয়, তাহলে তাদের (কার্ডধারীদের) উল্লেখযোগ্য লাভ হতো।’
টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, ‘পণ্য বাড়ানোর সম্ভাবনা এখন নেই। তিনটি পণ্য সরবরাহ করাটাই এখন চ্যালেঞ্জ। পবিত্র রমজানের সময় ছোলা ও খেজুর আমরা দিয়েছি, যা খুবই জরুরি ছিল। আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজ যুক্ত করি। আপাতত পরিকল্পনার মধ্যে এতটুকুই আছে, যা আমরা সুচারুরূপে করার চেষ্টা করছি।’