ভোক্তাদের অভিযোগ, অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে কাঁচা মরিচের পর এবার আলুর দাম বাড়াচ্ছেন। এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁরা নানা অজুুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন।রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা আলুর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন আলুর পাইকারি দাম প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার সুযোগ নিয়ে প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে আলু প্রতি কেজি ৪৫ টাকায়ও বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারে সাধারণত কার্ডিনাল বা ডায়মন্ড জাতের সাদা ও লাল আলু সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে
দাম বাড়ার বিষয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের পর পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে। তাই দাম কিছুটা বাড়তি। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন মোকামেই আলুর দাম বেশি। এ কারণে বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘আলুর দাম দেড় মাস ধরেই বাড়ছে আগে আলু প্রতি কেজি ছিল ৩০ টাকা, সেটি কোরবানির ঈদের আগ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। ঈদের পর কেজিতে আরো ১০ টাকা বেড়ে এখন মানভেদে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার কারণে আমাদেরও বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
তারা ‘এখন মোকাম থেকেই বাড়তি দামে আলু কিনতে হচ্ছে। প্রতি কেজিতে খরচ পড়ে যাচ্ছে প্রায় ৩৬ টাকা। পরিবহনসহ সব খরচ মিলিয়ে ৪০ টাকার নিচে বিক্রি করা যাচ্ছে না।’
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির বাজারদরের তালিকায় দেখা গেছে, এক বছরের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে আলুর দাম বেড়েছে ৩৪ শতাংশের বেশি। গত বছরের এই সময়ে বাজারে আলুর কেজি ছিল ২৮ থেকে ৩০ টাকা, যা এ বছর ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। টিসিবির এই দর অনুযায়ী গত এক সপ্তাহে আলুর দাম বেড়েছে ৩ শতাংশের মতো।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের হিসাব মতে, গত বুধবার পর্যন্ত হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর রয়েছে ২৬ লাখ ৫৩ হাজার টন।
কাঁচা মরিচের দাম এখনো ক্রেতার নাগালের বাইরে। গতকাল রাজধানীর বাজারগুলোতে খুচরায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকায়। ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৬০০ টাকা পাল্লা (পাঁচ কেজি)। প্রতি কেজির দাম পড়ে ৩২০ টাকা। সরবরাহ আরো বাড়লে কাঁচা মরিচের দাম কমবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
বাজারে মরিচের সরবরাহ বাড়াতে এখন বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিনই কাঁচা মরিচ আসছে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গতকাল ভারত থেকে এসেছে ৫৭ টন ২৫০ কেজি কাঁচা মরিচ।
৯০ ব্যবসায়ীকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা : কাঁচা মরিচের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভিযানে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এই তদারকি অভিযানে সারা দেশে ৯০ ব্যবসায়ীকে ছয় লাখ পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গতকাল ভোক্তা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে একযোগে কাঁচা মরিচ ও চিনির মূল্য এবং মজুদসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তদারকির লক্ষ্যে অভিযান পরিচালিত হয়। ঢাকায় অভিযান পরিচালনা করে দুটি টিম। অন্যান্য বিভাগীয় শহরসহ মোট ৩৬টি জেলায় একযোগে এই অভিযান পরিচালিত হয়। সব মিলিয়ে ৩৮টি বাজারের ৯০ জন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়।