1. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  2. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  3. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৬:২০ পূর্বাহ্ন

আমার ছোট দিদি (শেষ পর্ব)

অরুপ গোস্বামী
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৪
এরপর আমরা বেশ কবার ওর কাছে গেছি। ভাগ্নেদের বিয়েতে উপস্থিত হতে না পারলেও ভাগ্নির বিয়েতে দুই
বোনকে নিয়ে সপরিবারে উপস্থিত হয়েছিলাম। সেটা আমার বড় দিদির প্রথম ও শেষবার ওর বাড়ি যাওয়া। সেবার তিন বোন মিলে খুব আনন্দ করেছিল। দিদি ছেলে ২ জনের বিয়ে দিয়ে ২ জন বৌমা নয়,দুটো মেয়ে এবং মেয়েকে বিয়ে দিয়ে জামাই নয়,ছেলে পেয়েছিল। এগুলো আমার বানানো কথা নয়,ওর নিজ মুখে বলা এবং আমার নিজ কানে শোনা কথা। এজন্য বৌমাদের যেমন কৃতিত্ব, শ্বাশুড়ির অবদানও কম নয়।
ওর সম্পর্কে লিখতে গেলে অনেক কথাই মনে আসে,কিন্তু এখন যেন সবকিছুই এলোমেলো লাগে। মাঝে দাদা বৌদি একবার আর আমরা কয়েকবার সেখানে গিয়ে দেখা করে এসেছি। কিন্তু ওরা আর আসেনি। জামাইবাবুর অসুস্থতার কারণেই মূলত ওরা আসেনি। জামাইবাবুর মৃত্যুর দুই বছর পর গত ২০২২ সালে এদেশে আসে।ওর ছোট ছেলে ও বউমা ওপারে রেখে যায়।আমরা দর্শনা থেকে ওকে নিয়ে আসি।ও দুই ব্যাগ ভরিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে আসে।কেবল আত্মীয় স্বজনের জন্য নয়,বরং পাড়া প্রতিবেশী অনেকের জন্যও কিছু না কিছু নিয়ে এসেছিল।
ও এদেশে থাকাকালীন ভিসার দরখাস্ত করে এক বছরের ভিসা পাই। দিদির পরিকল্পনা অনুযায়ী অক্টোবরের শেষ দিকে দিল্লি যাবার প্রোগ্রাম করি। দিদি ওর বড় ছেলের পরিবার ও মেয়ের পরিবার নিয়ে হরিদ্বার, ঋষিকেশ, দিল্লির বিভিন্ন স্পট,মথুরা, বৃন্দাবন ও আগ্রা ঘুরিয়ে দেখায়।ছোট ছেলে ও বউকে খুবই মিস করে, একথা সে অনেকবার বলেছে।সে আফসোস ঘোচানোর জন্য গত ডিসেম্বরের ত্রিশ তারিখ ওরা সকলে মিলে উড়িষ্যার পুরী ও ভুবনেশ্বর ঘুরতে যাবার প্রোগ্রাম করে। আমাদেরকেও যেতে বলেছিল। কিন্তু আমাদের অন্য প্রোগ্রাম থাকায় এবং ভারতীয় ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি যেতে অস্বীকার করি।এটা ছিল ওর স্বপ্নের ট্যুর, কিন্তু সে ট্যুর ও সম্পন্ন করে যেতে পারলো না।মাত্র পাঁচদিন আগে সব আয়োজন ভন্ডুল করে সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেল।
২০২২ সালের অক্টোবরে সে আমাকে শেষ বারের মতো ভাইফোঁটা দেয়।দিদির শেষ বারের এদেশে আসা ও আমাদের ভারত যাবার সময় ওকে আমি বিশেষ ভাবে আবিষ্কার করে বুঝতে পারি, ও জামাইবাবুকে খুব মিস করে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা থাকাটাই স্বাভাবিক, কিন্তু দিদির ভালবাসা কিছুটা অস্বাভাবিক লেগেছে। জামাইবাবুর মৃত্যুর দুই বছর পরেও সে তাঁকে খুঁজে ফিরতো।সে সবাইকে সমান ভালবাসতো,কাউকে কম বেশি নয়।দুই ছেলে, বউমা,মেয়ে, নাতি,ভাই,বোন সকলকেই সে সমান ভালবাসতো।তবে জামাইবাবুর প্রতি ওর টান ছিল অন্য লেভেলের। সেই টানেই বোধহয় এতো তাড়াতাড়ি তাঁর কাছে চলে গেলো। ওপারে ভালো থাকিস দিদি,দেখা হবে সেখানেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews